1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর (PDF) রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর (PDF) রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
মাধ্যমিক - বাংলা
সিন্ধুতীরে 
সৈয়দ আলাওল 



কবি সৈয়দ আলাওল :

সৈয়দ আলাওল সপ্তদশ শতাব্দীতে বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার জালালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে অন্যতম প্রধান কবি সৈয়দ আলাওল ঘটনাচক্রে আরাকানরাজের অশ্বারোহী সৈন্যদলে নিযুন্তহন।

তাঁর প্রথম এবং শ্রেষ্ঠ রচনা “পদ্মাবতী”। “সয়ফুলমুলুক বাদিওজ্জমাল” প্রধানমন্ত্রী মাগন ঠাকুরের অনুরোধে তিনি রচনা করেন। এছাড়াও তিনি সপ্তপয়কর” “তোহফা”, লোরচন্দরাণী’ প্রভৃতি গ্রন্থ অনুবাদ ও রচনা করেন। পাঠ্যাংশটি তার পদ্মাবতী” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।


{tocify} $title={সূচীপত্র}

  • সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর :

  • বহুবিকল্পীয় প্রশ্ন

১. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের কোন্ খণ্ডের অন্তর্গত ?

ক. দেশযাত্রা

খ. খিলখণ্ড

গ. পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড

ঘ. রত্নসেন-সাথীখণ্ড


২. “দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার”-এ নিপতিতা হয়েছিল—

ক. কবি

খ. পদ্মাবতী

গ. রত্নসেন

ঘ. সমুদ্রকন্যা


৩. “কন্যারে ফেলিল যথা…!”–কন্যাকে ফেলেছিল—

ক. সমুদ্রতীরে

খ. রাজপুরীতে

গ. সমুদ্রের মাঝখানে

ঘ. পুষ্প কাননে


৪. দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার।’—“দিব্য পুরী’ বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে

ক. রাজপুরী

খ. স্বর্গীয় পুরী

গ. কুৎসিতপুরী

ঘ. পাতালপুরী


৫. “নাহি তথা দুঃখ ক্লেশ…”—কোথায় ‘দুঃখ ক্লেশ’ ছিল না?

ক. রাজপুরীতে

খ. স্বর্গলোকে

গ. মর্ত্যলোকে

ঘ. দিব্যপুরীতে


৬. “সমুদ্রনৃপতি সুতা…।”—সমুদ্রপতি সুতা কে?

ক. পদ্মা

খ. গঙ্গা

গ. যমুনা

ঘ. বেহুলা


৭. সিন্ধুতীরের উপরের পর্বত ছিল—

ক. ঘরবাড়িতে পূর্ণ

খ. ফল-ফুলে সজ্জিত

গ. পশুপাখিতে ভরা

ঘ. জল-মানুষে পূর্ণ


৮. “তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি…।”—“টঙ্গি’ হল—

ক. দড়ি

খ. ছবি

গ. প্রাসাদ

ঘ. ফুল


৯. “সখীগণ করি সঙ্গে…।”—সখীদের সঙ্গে নিয়ে পদ্মাবতী কোথায় আসত?

ক. উদ্যানে

খ. রাজপুরীতে

গ. খেলার মাঠে

ঘ. রাজদরবারে


১০. “রূপে অতি রম্ভা জিনি…।”–রম্ভা হল—

ক. পদ্মাবতীর সখী

খ. সতী নারী

গ. স্বর্গের অপ্সরাবিশেষ

ঘ. নারদের স্ত্রী


১১. সমুদ্রকন্যা কীসে রম্ভাকে জয় করেছে?

ক. কথায়

খ. রূপে

গ. অর্থে

ঘ. জীবনী শক্তিতে


১২. “বিস্মিত হইল বালা…।”—বালা কী দেখে বিস্মিত হয়েছিল?

ক. নিপতিতা কন্যার অচৈতন্য অবস্থা দেখে

খ. নিপতিতা কন্যার কুৎসিত রূপ দেখে

গ. নিপতিতা কন্যার রূপের বাহার দেখে

ঘ. নিপতিতা কন্যার চাহনি দেখে


১৩. অনুমান করে নিজ চিতে।” –‘নিজ চিতে’ বলতে বোঝানো হয়েছে—

ক. নিজ মনে

খ. নিজ হাতে

গ. নিজ বুদ্ধিতে

ঘ. নিজ কর্মফলে


১৪. “বেথানিত হৈছে কেশ-বেশ।”–‘বেথানিত’ অর্থে—

ক. বেদনাযুক্ত

খ. অসংবৃত

গ. দৃষ্টিগোচর

ঘ. ব্যথায় নত


১৫. “বাহুরক কন্যার জীবন।”—‘বাহুরক’ শব্দের অর্থ হল—

ক. হস্তদ্বারা

খ. ফিরে আসুক

গ. অবসান হোক

ঘ. বেরিয়ে যাক


১৬. “দণ্ড চারি এই মতে…।”—‘দণ্ড চারি’ হল—

ক. ৬০ মিনিট

খ. ৭০ মিনিট

গ. ৯০ মিনিট

ঘ. ৯৬ মিনিট


১৭. “বহু যত্নে চিকিৎসিতে”–চেতনা ফিরে পেল—

ক. পঞ্চকন্যা

খ. চিতোরের কন্যা

গ. চিতোরের রানি

ঘ. নাগকন্যা


  • অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন

১. “কন্যারে ফেলিল যথা…।”–কন্যাকে কোথায় ফেলা হয়েছিল?

উত্তর: কন্যাকে ফেলা হয়েছিল সমুদ্রের মাঝখানে দিব্যপুরীতে।

২. “অতি মনোহর দেশ…।”—কোন্ দেশকে ‘অতি মনোহর’ বলা হয়েছে?

উত্তর: সমুদ্রের মাঝে দিব্যপুরীকে ‘অতিমনোহর দেশ’ বলা হয়েছে।

৩. “তার পাশে রচিল উদ্যান।।”—কার পাশে উদ্যান রচনা করা হয়েছিল?

উত্তর: সমুদ্রতীরে যে-দিব্যস্থান ছিল—তার ওপরে ফল-ফুলে সজ্জিত পর্বতের পাশে উদ্যান রচনা হয়েছিল।

৪. “তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি”—কোথাই ‘বিচিত্র টঙ্গি’ ছিল?

উত্তর: সিন্ধুতীরে দিব্যস্থানে যে-সুন্দর উদ্যান—সেই উদ্যানেই ছিল বিচিত্র টঙ্গি।

৫. “তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ।”—উদ্ধৃতাংশে কার সম্পর্কে কথাটি বলা হয়েছে ?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশে রূপকথার সমুদ্রপুরীর সমুদ্রকন্যা সম্পর্কে কথাটি বলা হয়েছে।

৬. “সিন্ধুতীরে রহিছে মাস।।” – উদ্ধৃতাংশে ‘মাঞ্জস’ কথাটির অর্থ কী? তা কীসের জন্য রয়েছে?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশে ‘মাঞ্জস’ কথাটির অর্থ হল ভেলা জাতীয় জলযান বিশেষ। এটি সমুদ্রকন্যা পদ্মার যাতায়াতের জন্য রয়েছে।

৭. “অনুমান করে নিজ চিতে।”—কে, কী অনুমান করে ?

উত্তর: সমুদ্রকন্যা পদ্মা নিজের হৃদয়ে অনুমান করে যে, হয়তো কোনো স্বর্গীয় অপ্সরী দেবরাজ ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে মর্তে অচৈতন্য অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে।


৮. “দেখে চারি সখী চারিভিত।” – উদ্ধৃতাংশে কোন্ চার সখীর কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশে মূৰ্ছিতা পদ্মাবতীর চারদিকে যে চারজন সখী অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল, তাদের কথা বলা হয়েছে।


৯. “বেকত দেখিয়ে আঁখি”—উদ্ধৃতাংশটি কোন কবিতার অন্তর্গত? ‘বেকত | কথাটির অর্থ কী?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি ‘সিন্ধুতীরে’ শীর্ষক কবিতার অন্তর্গত এবং ‘বেকত’ কথাটির অর্থ হল প্রকাশিত।

১০. “মোহিত পাইয়া সিন্দু-ক্লেশ।।”—কথাটির অর্থ কী?

উত্তর: সমুদ্রকন্যা পদ্মা মূৰ্ছিত পদ্মাবতীকে দেখে অনুমান করেছেন যে, হয়তো সমুদ্রের প্রবল ঝড়ে নৌকা ভেঙে সমুদ্র-ক্লেশে পীড়িত হয়ে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে।

১১. “বাহুরক কন্যার জীবন।”–‘বাহুরক’কথাটির অর্থ কী? কোন কন্যার জীবন সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ‘বাহুরক’কথাটির অর্থ হল ফিরে আসুক। অচৈতন্য কন্যা পদ্মাবতী সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে।

১২. “বিধি মোরে না কর নৈরাশ।।”—উক্তিটি কার? তার এরূপ উক্তির কারণ কী?

উত্তর: উক্তিটি সমুদ্রকন্যা পদ্মার। সে স্নেহপ্রবণ মন থেকে অচৈতন্য পদ্মাবতীর চেতনা ফিরিয়ে আনার জন্য যে চেষ্টা করছে, তার থেকে যেন সে বঞ্চিত না-হয়। চেতনা ফিরিয়ে আনাটাই তার মুখ্য প্রত্যাশা। তাই সে এমন উক্তি করেছে।

১৩. “উদ্যানের মাঝে নিল/পঞজনে বসনে ঢাকিয়া।” –কে, কাদের উদ্যানের মাঝে নিল?

উত্তর: সমুদ্রকন্যা পদ্মার নির্দেশে তার সখীরা অচৈতন্য চার সখীসহ পদ্মাবতীকে উদ্যানের মাঝে নিল।

১৪. “পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।”—পঞ্চকন্যা কীভাবে চেতনা ফিরে পেল?

উত্তর: সমুদ্রকন্যা পদ্মা তার সখীদের নিয়ে অচৈতন্য পঞ্চকন্যাদের বহু যত্নে সেবা শুশ্রুষা করে চেতনা ফিরিয়ে আনল।

১৫. “চিকিৎসিমু প্রাণপণ /কৃপা কর নিরঞ্জন”—এ আবেদন কার ?

উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাংশে এ-আবেদন পদ্মার।

১৬. সখীরা অচৈতন্য কন্যার কতক্ষণ চিকিৎসা করেছিল ?

উত্তর: সখীরা অচৈতন্য কন্যার চারদণ্ড ধরে চিকিৎসা করেছিল।


  • সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

১. পদ্মা কে? সে কীরূপ উদ্যান রচনা করেছিল?

পদ্মা : আলাগার রাজসভার শ্রেষ্ঠ কবি সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যে সিন্ধুতীরে কবিতায় পদ্মা হলেন সমুদ্রের রাজার গুণবতী কন্যা। উদ্যানের পরিচয় :সমুদ্রতীরে এক সুন্দর স্থানে যেখানে ফল ও ফুলের প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ এক পর্বত রয়েছে, তার পাশে পদ্মা একটি সুন্দর উদ্যান রচনা করেছিল। নানাবিধ সুগন্ধি পুষ্প ও ফল এবং সুলক্ষণ যুক্ত বৃক্ষ তার শােভা বর্ধন করত। তার মধ্যে স্বর্ণখচিত প্রাসাদে পদ্মা বাস করতেন।{alertSuccess}


২. ‘পঞ্চকন্যা পাইল চেতন’–পঞ্চকন্যা কিভাবে চেতন পেয়েছিল?

পঞ্চকন্যার চেতনাপ্রাপ্তি : সমুদ্রকন্যা পদ্মা প্রথমে বিধাতার কাছে পদ্মাবতীর জন্য প্রার্থনা করেন। তারপর তিনি উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পদ্মার আদেশে তার সখীরা অচেতন পদ্মাবতী ও তার সখীদের দেহ কাপড়ে ঢেকে উদ্যানের মধ্যে নিয়ে যান। তারপর তন্ত্রমন্ত্ৰ মহাঔষধের দ্বারা তাদের মাথায় এবং পায়ে আগুনের সেক দেওয়া হয়। এইভাবে চারদণ্ড চিকিৎসা করার পর চার সখীসহ পদ্মাবতী জ্ঞান ফিরে পায়।{alertSuccess}


৩. ‘দেখিয়া রূপের কলা/বিস্মিত হইল বালা/অনুমান করে নিজ চিতে।’—কে নিজের চিত্তে কার রূপের কলা কখন অনুধাবন করেছিলেন?

পদ্মাবতীর অপরূপ রূপ: ব্রাত্মণরূপী সমুদ্রের বুদ্রতাপে সিংহল থেকে চিতরে ফেরার সময় রত্নাসেন ও প্রিয়দর্শিনী পত্নী পদ্মাবতী জীবন সংশয়ের মুখে পড়েন। পদ্মাবতী সিন্ধু তীরে অত্যন্ত বেদনাহত হয়ে সাহীন হয়ে পড়েন। সমুদ্র তীরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন সমুদ্রকন্যা পদ্ম। তার অর্থাৎ পদ্মাবতীর রূপ লাবণ্য দেখে সমুদ্রকন্যা অবাক হয়ে যায়।{alertSuccess}


৪. চেতন রহিত কন্যাটির আঁখি, বসন ও কেশের অবস্থা কীরকম এবং কেন?

উত্তর : কবি সৈয়দ আলাওল তার ‘ সিন্ধুতীরে’ কবিতায় চেতন রহিত কন্যাটির আঁখি, বসন ও কেশের সংক্ষিপ্ত অবস্থাটি লিখেছেন। আসলে রাজকন্যা পদ্মার দৃষ্টিতেই অবস্থাটি দেখা। কন্যাটি ভেসে এসেছে সমুদ্রের তরঙ্গভঙ্গে। হয়তাে বা প্রবল ঝড়ে ভেঙেছে তার নৌকোখানি। অশেষ ক্লেশ বয়ে গিয়েছে। তার শরীরের ওপর দিয়ে। তার আঁখি দুটি খােলামাত্র; কিন্তু দৃষ্টির চেতনা নেই। বসনও আলুথালু। সে কারণে কেশসৌন্দর্য নেই। বিস্রস্ত তার কেশবেশ।{alertSuccess}


৫. কাকে চিত্রের পােতলি সমা’ বলা হয়েছে? কেন বলা হয়েছে?

উত্তর : কবি সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে’কবিতায় ভােরবেলায় রাজকন্যা পদ্মার গড়া উদ্যানে হঠাৎ অচৈতন্য দেবকন্যা সমান মেয়েটিকে দেখলেন চার সখীসহ স্বয়ং পদ্মা। ভেবেছেন, হয়তাে সমুদ্রের ঝড়ে ভেঙে যাওয়া নৌকো থেকে জলের ঢেউয়ে ভেসে এসেছে মনােরমা মেয়েটি। দেখে মনে হচ্ছে, চিত্রের পুতুল যেমন নির্বাক, তুলতুলে, তেমন এই মেয়েটি। শ্বাসটুকু বইছে মৃদুভাবে। আহা, কী হাল হয়েছে তার।{alertSuccess}


৬. সখীগণসহ রাজকন্যা পদ্ম কীভাবে অচেতন কন্যার যত্ন নিলেন?

উত্তর : কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় সমুদ্র থেকে ভেসে আসা অচেতন মনােরমা কন্যার যত্ন করা হয়েছে। যত্ন করেছেন সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মা ও তার সখীগণ। পদ্মর আজ্ঞায় পাঁচজনে মিলে বস্ত্রে ঢেকে উদ্যানের মধ্যে সেই কন্যাকে তারা নিয়ে। গেলেন। তারা তন্ত্রে, মন্ত্রে, মহৌষধি দিয়ে মাথায় ও পায়ে সেক দিতে লাগলেন। প্রায় চারদণ্ড মতাে সময় ধরে বহু যত্নে পঞ্চকন্যা। চিকিৎসা করায় অচেতন কন্যার চেতনা ফিরে এল।{alertSuccess}


৭. সিন্ধুতীরে কবিতা অনুসারে রাজকন্যা পদ্মার সখীপ্রীতির পরিচয় লেখাে।

উত্তর : সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মার সখীপ্রীতির মাধুরীটি আমরা দেখতে পাই কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটিতে। এক প্রত্যুষে পিতৃগৃহ থেকে সখীগণের সঙ্গে হাসিকৌতুক করতে করতে এলেন নিজ নির্মিত উদ্যানে। মনে কৌতুক নিয়ে তিনি ও তার সখীরা দেখলেন, অতিশয় রূপবতী আলুথালু বেশে এক কন্যা অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন উদ্যানে। তার নির্দেশে সখীগণ বসনে ঢেকে কন্যাকে উদ্যানের মাঝে নিয়ে এলেন। সখীপ্রীতিতে তারা নানা চিকিৎসায় কন্যার চেতনা ফেরালেন।{alertSuccess}


৮. সিন্ধুতীরে’ কবিতা অনুসারে রাজকুমারী পদ্মার রূপপ্রীতির প্রমাণ দেখাও।

উওর : কবিতা আলাওল রচিতসিন্ধুতীরে’কবিতায় সমুদ্ররাজের কন্যা গুণবতী পদ্মার হৃদয়ে রূপপ্রীতিটি সর্বাংশে ছিল। রূপ ও সৌন্দর্যপ্রীতির কারণে তিনি স্বয়ং সুশােভন একটি উদ্যান রচনা করেছিলেন। উদ্যানমধ্যে হঠাৎ দেখা অচেতন কন্যার রূপবিভায় তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। কন্যাটি রূপে রম্ভা অপেক্ষাও উত্তম। মনে করেছেন। ভেবেছেন, হয়তাে বা ইন্দ্রশাপে কোনাে বিদ্যাধরি, কিংবা স্বর্গভ্রষ্ট কোনাে করিণী। তাঁর মনে হয়েছে, কন্যাটি চিত্রের পুত্তলি সমান মনােরমা। এমনই তার রূপ তথা সৌন্দর্যপ্রীতি!{alertSuccess}


৯. হীন আলাওল সুরচন৷’ –আলাওল নিজেকে ‘হীন আলাওল’ বলেছেন কেন? তিনি কীভাবে তার কাব্যরচনা করলেন?

উত্তর : প্রথমত মধ্যযুগের জনপ্রিয় কবি আলাওল নিজেকে ‘হীন আলাওল’ বলে তার বিনয় নম্রতা প্রকাশ করেছেন। জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিগণের ধর্মই হলাে বিনয় তথা নম্রতা। সতেরাে শতকের কবি আলাওল আরাকান রাজসভার কা ছিলেন। সেখানে আরাকানের প্রধানমন্ত্রী মাগনঠাকুর, অথম সুলেমান, পণ্ডিত সৈয়দ মুসা, সৈয়দ মসুদ শাহ এবং আরাকানরাজ শ্রীচন্দ্র সুধর্মার নির্দেশে অনেক কাব্য অনুবাদ করেন। এখানে। শ্ৰীযুক্ত মাগনের নামে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।{alertSuccess}


১০. ‘চিকিৎসিমু প্রাণপণ’-কার চিকিৎসা করা হবে? চিকিৎসার বিবরণ দাও।

উওর : সিংহলরাজের কন্যা, চিতােররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া পত্নী পদ্মাবতী ও তার সখীদের চিকিৎসা করা হবে। রম্ভাজয়ী সুন্দরী পদ্মাবতীকে চেতনাহীন অবস্থায় দেখে গন্নার মনে প্রবল স্নেহােদয় হয়। তিনি তার এবং তার সখীদের চেতনা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হন। ঈশ্বরের কৃপা প্রার্থনা করে অচেতন এই পঞ্চকন্যাকে বসনে ঢেকে উদ্যানে নিয়ে আসার আজ্ঞা নেন।

এখানে নানাভাবে চিকিৎসা চলে। আগুন জ্বেলে কেউ গায়ে সেক দেয়। কেউ মাথায় সেঁক দেয়। কেউ বা সেঁক দেয় পায়ে। তান্ত্রিক মতে, মন্ত্রশক্তি প্রয়ােগ করে এবং মহৌষধি প্রয়ােগ করে চরদণ্ড ধরে প্রাণপণ চিকিৎসা করা হয়। এইভাবে পঞকন্যা চেতনা ফিরে পান।{alertSuccess}


১১. ‘তন্ত্রে মন্ত্রে মহৌষধি দিয়া’-কার জন্য এই পরিচর্যা? কীভাবে, কারা এই পরিচর্যা করেছিলেন?

উত্তর : সিংহলরাজের কন্যা, চিতােররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া পত্নী পদ্মাবতী ও তাঁর চার সখীদের জন্য এই পরিচর্যা।

সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্ম ও তাঁর সখীরা এই পরিচর্যা করেছিলেন। পদ্মর আদেশে তার সখীরা বসনে ঢেকে অচেতন পদ্মাবতী ও তার সখীদের উদ্যানে নিয়ে আসেন। এখানে নানাভাবে চলে তাদের পরিচর্যা।

আগুন জ্বেলে কেউ গায়ে সেঁক দেয়। কেউ মাথায় সেঁক দেয়। কেউ বা সেঁক দেয় পায়ে।তান্ত্রিক পদ্ধতি প্রয়ােগ করে চিকিৎসা চলে। মন্ত্রশক্তির প্রয়োেগও করা হয়। প্রয়ােগ করা হয় মহৌষধি। এইভাবে চারদণ্ড ধরে চলে পরিচর্যা। ধীরে ধীরে ফিরে আসে। পঞ্চকন্যার চেতনা।{alertSuccess}


১২. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মার কী গুণের পরিচয় পাওয়া যায়?

উত্তর : সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্ম নানান গুণে গুণবতী। কবি স্বয়ং বলেছেন—“সমুদ্র নৃপতি সুতাপদ্মা নামে গুণযুতা’। প্রশংসনীয় পদ্মার সৌন্দর্য রুচি। তার ঈশ্বর বিশ্বাস, পিতৃভক্তি, সখীপ্রীতি তাকে উজ্জ্বল করে তুলেছে। তবে যে গুণটি তাকে একেবারে অনন্যা করে তুলেছে তা হলাে অনুভূতিপ্রবণতা। তাঁর স্নেহকোমল হৃদয়টির তুলনা নেই।

সমুদ্রলাঞ্ছিতা পদ্মাবতী ও সখীদের মুমূর্ষ অবস্থা তাঁকে বড়াে ব্যাকুল করে তুলেছে। তাদের চেতনা ফেরানাের চেষ্টায় তিনি ঈশ্বরকে স্মরণ করেছেন। সখীদের সহযােগিতায় তাদের নিজের উদ্যানে এনে চার দণ্ডের প্রানপন পরিচর্যার মাধমে চেতনা ফিরিয়ে এনেছেন।{alertSuccess}


১৩. ‘অতি মনােহর দেশ’ –মনােহর কথার অর্থ লেখাে। এই প্রসঙ্গে মনােহর দেশটির বর্ণনা দাও। অথবা, “অতি মনােহর দেশ”—এই ‘মনােহর দেশে’র সৌন্দর্যের পরিচয় দাও।

উত্তর : মনােহর কথার সরলার্থ হলাে, যা মনকে হরণ করে অর্থাৎ, মনকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে। এককথায় অতি সুন্দর।

‘মনােহর দেশ’ বলতে কবি সমুদ্রতীরের এমন একটি স্থানের কথা বলেছেন যেখানে পদ্মাবতী ও তার সখীরা অচৈতন্য অবস্থায় একটি মান্দাসে ভেসে এসেছিলেন। এখানেই সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মা তারস্বর্ণে-রত্নে নির্মিত উজ্জ্বল টঙ্গিতে সর্বক্ষণ থাকেন।

এই মনােহর দেশে কারও মনে কোনাে দুঃখ-ক্লেশ নেই। সততা, সদাচার এবং নাচরণের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে সবাই। স্থানটি ফুলে-ফলে পরিপূর্ণ এক দিব্যস্থানের মতাে। এখানে একটি পর্বত আছে। সেই পর্বতর্টিও সুন্দর সুন্দর সুগন্ধী ফুলে এবং নানান ফলে সমৃদ্ধ।{alertSuccess}


১৪. “তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ’–কন্যাটি কে? তিনি কোথায় সর্বক্ষণ থাকেন?

উত্তর : কবি সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে উধৃত এই অংশে যে কন্যাটির উল্লেখ আছে তিনি হলেন সমুদ্ররাজের গুণবতী কন্যা পদ্মা। পদ্মা সিন্ধুতীরে এক অতি মনােহর দেশে থাকেন। সেখানে কারও মনে কোনাে দুঃখ-ক্লেশ নেই।সততা,সদাচার এবং ধর্মাচরণের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে সবাই।

এখানে এক দিব্যস্থান দেখে নিয়ে ফল-ফুলে পরিপূর্ণ এক পর্বতের পাশে পদ্মা উদ্যান নির্মাণ করেন। নানান মনােহর সুগন্ধিত পুষ্প এই উদ্যানটির শােভা বর্ধন করে। নানান ফলের বৃক্ষও আছে। হেমরত্নে উজ্জ্বল একটি টঙ্গি’ অর্থাৎ, এখানে প্রাসাদ নির্মাণ করে পদ্মা সর্বক্ষণ তাতে থাকেন।{alertSuccess}


১৫. ‘যদি হইল সময় প্রত্যুষ’—প্রত্যুষকালে কী হলাে?

উত্তর : সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মা পিতৃগৃহে নিশি যাপন করে প্রত্যুষকালে অর্থাৎ, সকালে সখীদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা, রঙ্গরসিকতায় মেতে উদ্যানের দিকে যাচ্ছিলেন। এই সময় তিনি সিন্ধুতীরে একটি মান্দাস দেখতে পান। তারা কৌতূহলবশত মান্দাসটির কাছে ছুটে যান, দেখেন চার সখী চারদিকে, মাঝে রূপবতী রম্ভার চেয়েও সুন্দরী এক নারী। সবাই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন। আতঙ্কে বিস্ফারিত চোখ, এলােমেলাে বসন, আলুলায়িত কেশ বেশ, সামান্য শ্বাসটুকু শুধু আছে।{alertSuccess}

Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন