1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

চৌরাস্তার জ্যোৎস্না : বিদ্যুৎ ভৌমিক

চৌরাস্তার জ্যোৎস্না 

বিদ্যুৎ ভৌমিক

      




আমিটা অন্য আমিতে বরাবরই এভাবেই আড়াল হয়ে ছিল ! অযত্নে ললিত মন ; মনের মধ্যে নাবালক হৃদয় পয়মন্ত স্বপ্নের প্রার্থনায় ছায়ার মধ্যে শূন্যতা আঁকি ,----   কোথাকার স্মৃতি গুলো সতত এভাবেই নির্ঘুম ; ভীষণ নির্জন ! 


তবু চোখ থেকে কবেই উড়ে গেছে অভিমান ; চৌকাঠে রক্তের চিহ্ন নিয়ে বহুকাল শুয়ে ছিল আমার প্রতিটা জন্মের ছায়া ,---- প্রাচীন দর্পণে ভূত সেজে ঝাপসা দেখা দিয়েছিল অন্য কোনো অতীত ! এটা সেই এক বারই হয়েছিল .......



সেই একদিন মাঝরাস্তায় পথ আগলে কত কালের নাম ধরে কেউ একজন ডেকে ছিল ; তাকে এভাবেই ভাসিয়েছি চোখের জলস্রোতে !

চৌকাঠে সটান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিমূর্ত কিছু প্রেত মধ্যরাতে নিজমূর্তি ধারণ করে মুখ ও মুখোশের চারপাশে লেপে দিয়ে ছিল রসাতলে যাবার কটুগন্ধ !


তবুও শেষটুকু দেখবো বলে সন্দীপনের কাছে শিখে নিয়ে ছিলাম মৃত্যু বরণের  গোপন বিদ্যা ,---- 


হাতের চেটোতে ভাগ্যের দোহাই লেখা ছিল ; ছিল কতকিছু ! সবটাই বিবর্ণ , নিরাভরণ ..... তবুও রাত দশটার ভেতর বিষ মেশানো সময় দয়াপ্রার্থীর মত অন্তর্গত দুঃখে ও জ্বালায় অশরীর আমিটাকে সদর দরজা অব্দি এগিয়ে দিয়ে লুকিয়ে ছিল অবলীলায় ! হৃদয় রোগ না হলে দীর্ঘশ্বাস এত জটিল হত . !



কাছে - দূরের আকাশ থেকে প্রাণহীন অস্থিরতা অনন্ত বিস্তৃত ;

প্রতিজন্মের প্রেম গুলো শ্মশান যাত্রীদের তালিকায় না থাকলেও মৃত্যুর মত সহজ নিঃশব্দে কাঙালের চেহারা নিয়ে বলে উঠে ছিল হে প্রেমীক তুমি আর একবার বেঁচে ওঠো !



স্বাভাবিক ভাবে কোথাও কিছু পুড়ে ওঠার গন্ধ নাকে এলে আমি মৃত্যুর পরও স্তব্ধ হয়ে যাই ! 


দিনাবসানে নির্ঘুম জাগরণে রাস্তা পার করছিল শোক - তাপ গুলো ৷ অর্ধেক সুখ নিয়ে সেজে উঠেছিল চৌরাস্তার জ্যোৎস্না ; সে নগ্ন ও সুচারু অথচ অনাহারে অনেকটাই অনাত্মীয়ের মত এলোমেলো ! ওখানে রাত পোহায় পুরাতন স্মৃতির ভেতর ; হয়তো ফুল - তারা - আকাশের চাঁদ দেখে দেখে ,----- 


একদিন এখানে অনেকেই আর্শির পেছন থেকে দেখছিল আমায় ! আমার পায়ের কাছে   কোনো এক বিরল প্রজাতির আত্মার ছায়া খুঁটে খাচ্ছিল অপয়া ঈশ্বর ,---- তাই দেখে আমার ব্যর্থ বিশ্বাস অফুরান আবেগে হেসে উঠেছিল পারিপার্শিক অন্ধকার মেশা বাতাসে !



কেউ একজন আদিখ্যেতার মলম মাখিয়ে দিতে এসে ছায়া ছায়া অশরীর বর্ণবাহার বিছিয়ে দিয়েছিল আমার ঘুমহীন নির্ঘুমে !


সেই চৌরাস্তা যেন অপার্থিব পথ ; নিঃশব্দ অসুখের ভেতর নিভৃত প্রহরী ৷ সেখানে আকাশ ভাঙা দুঃস্বপ্নরা এভাবেই আমাকে স্তব্ধ অসহায় করে রেখেছিল ব্যক্তিগত আনন্দ পেতে ,----- কতবার কতভাবে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে যেতে নীরব প্রতীক্ষায় অপেক্ষা করি সেই নিষ্ঠুর অতীতের প্রেম একবার যদি ফিরে আসে !



চুন খসা দেওয়ালের বিছানা ছেড়ে ঝুলন্ত ক্যালেন্ডারে কতবার খুঁজেছি আমার মৃত্যুর ভবিষ্যৎ ! কেউ একজন  মধ্যরাতে বৃষ্টির ভেতর সিঁড়ির নিচে নগ্ন দাঁড়িয়ে বহুক্ষণ আমাকে দেখছিল ,---- ওকে স্পর্শ করতেই আঙুলে অকস্মাৎ ছেঁকা লেগেছিল ! এরপর মৃদু কান্নার শব্দে অসতর্কে চোখ ঘুরছিল চারপাশে জুড়ে ; এর অনেক্ষণ এভাবেই কেটে গিয়েছে সময় ! কখনযে আমার মৃত্যু হয়েছে অজানা অদ্ভূত সময়ে ; টেরই পাইনি !!


              

Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন