1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

তুমি রয়েছো বলেই : শুভজিৎ বিশ্বাস

তুমি রয়েছো বলেই
শুভজিৎ বিশ্বাস 

 



ঠাৎ ফোনে মায়ের কলের রিংটন টা বেজে ওঠায় পুকুরের এক ধারে গিয়ে কেশে গলাটা পরিষ্কার করে অনুপম কলটা তুলে বলল, 
(অনুপম) ছেলে - হ্যাঁ, মা বলো। 
মা - কি করছিস খোকা  ? 
ছেলে -  এই তো বসে আছি। মেসের পিছনের দিকে যে পুকুরটা আছে, ওটা ধারেই ...
মা - কেমন আছিস  ? 
প্রশ্নটা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করে অস্পষ্ট কন্ঠেই অনুপম বলল, 
ছেলে - তোমরা কেমন আছো, মা ? 
মা - আমরা সবাই ভালো আছি। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করেছিস ঠিকঠাক  ? 
ছেলে - বাবার শরীর কেমন আছে, মা  ? 

মা - বাবার শরীর এখন মুটামুটি সুস্থ আছে। কয়েকদিন আগে সামান্য খারাপ হয়েছিল। তুই চিন্তা করবি বলে তোকে জানায়নি। এখান চিন্তার কিছু নেই। আচ্ছা, তোর পড়াশোনা কেমন চলছে   ? 
ছেলে - আচ্ছা, মা, তোমরা আজ দুপুরে কি রান্না করেছিলে  ? 
মা - পুঁইশাক আর চিংড়ি দিয়ে একটা তরকারি। আচ্ছা, খোকা অভিনয়টা কবে শিখলি  ? খুব সুন্দর অভিনয় করতে শিখেছিস দেখছি। 
ছেলে - অভিনয় মানে ! বুঝলাম না মা, এসব কি বলছো  ! 
মা - যা জিজ্ঞাসা করছি সব প্রশ্নগুলো উপেক্ষা করে যাচ্ছিস। কি ব্যপার ! আর এরকম থেমে থেমে বলছিস, কি হয়েছে তোর  ? 
ছেলে - (হাসতে হাসতে) না কিছুই না। ঐ নেটওয়ার্কের সমস্যা হবে হয়ত। 
মা - আচ্ছা তোর গলার আওয়াজটাও কেমন ভাঙা ভাঙা লাগছে। এটাও কি নেটওয়ার্কের সমস্যা। যে প্রশ্নগুলো উপেক্ষা করেছিস, মিথ্যা বলবি না বলে। ওগুলোর উত্তর দে। কি হয়েছে পরিষ্কার করে বল। অভিনয়টা অন্য কোথাও করিস। তবে কখনও মায়ের সাথে নয়। 
ছেলে - (একটু নীচু স্বরে) না, মানে ...... এখন খুব ভালো নেই। 
মা - কেন  ? খাওয়া দাওয়ার সমস্যা হচ্ছে নাকি টাকা পয়সার  ! 
ছেলে - না মা। এসব কিছুই না। 

মা - তবে ? অরুনীতা'র (অনুপমের প্রেমিকা)  সঙ্গে আবার গন্ডগোল করেছিস  ? 
ছেলে - হ্যাঁ, মানে—
মা - এত মানে মানে করতে হবে না। সব বুঝেছি। আমি ওর সাথে কথা বলে নেব। আর একটা কথা মনে রাখবি, ' অন্যায় যারই হোক না কেন, একজন ক্ষমা চাইলে অন্ততঃ সম্পর্ক নষ্ট হয় না।' তুই ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিস। বাকিটা আমি ম্যানেজ করে নেব। আর হ্যাঁ, একটু কম্প্রোমাইজ করতে শেখ, ভবিষ্যতে কাজে দেবে। কলটা রাখি, আর অভিনয়টা আরও রেওয়াজ করিস, এবারটা হয়নি কিন্তু... 

অনুপম হাসতে হাসতে কলটা রেখে দিল। তার মন খারাপের বিকেলে শেষ সূর্যরশ্মির মতো তার মা কখন এসে সবটা খুশিতে ভরিয়ে দিল, তা অনুপম বুঝতেই পারলো না। 
নিজের আনমনেই অনুপম বিড়বিড় করে বললো, " তুমি রয়েছো বলেই, আজও আমি স্বপ্ন দেখার সাহস পাই। তুমি রয়েছো বলেই মা গো, ভালোবাসা আকাশ ছুঁতে চাই। শুধু তুমি রয়েছো বলেই মা ...

Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন