সুবর্ণকান্তি উত্থাসনী'র তিনটি কবিতা
অলঙ্করণ : বিশ্বজিৎ মণ্ডল |
ছায়া শরীর
ঘনত্বের ভূত নেই আছে শুধু তমোঘ্ন ঊর্ণজাল
প্রস্তরের নীল সুঘ্রাণ থিতিয়ে পড়েছে দিকচক্রবালে
দশায়ুধার নাভিস্তবে পুনরপি আলোক নির্মাণ
নশ্বর দেহ গড়ে ওঠে ক্ষয়ে মুমূর্ষু জরাপ্রাপ্ত ইন্দ্রিয়
যেখানে চলেছে বয়ে সময়ের নিরবধি পথ
যেখানে পিতৃরেণু চেনা আয়ুরেখার শীর্ণতাসম্বল
চরাচরে বৃক্ষরাজি
অনির্দেশ ডাকহরকরা
দ্রুতি বাঁধে বিরহী পিদিম
এখানে ক্ষুধামগ্ন ঘাসেদের স্নায়ব প্রলেপ
ক্ষণিকে ভরে ওঠে অনাহুত পাখিটির কিরিচের ক্ষত
তবুও অনন্ত শুধু চির চাওয়া নারীটির মুখ
বোধিভস্ম ডুবে থাকে জিহ্বার অরণ্য অতলে
উত্তরাধিকার
আমার বাবাকে আমি কখনো নিজের অধিকারটুকু চেয়ে নিতে দেখিনি
সেই বাবা যখন অগরুস্নাত ম্লানদেহে সুসজ্জিত ফরাস বেদীর ওপর শুয়ে
দ্বিপ্রাহরিক রেডিও শুনছেন নিষ্পলক মড়কক্লিস্ট আহারনিদ্রাহীন একতাল
মাংসপিণ্ড কে কেন্দ্র করে ১টি কাক ও ১টি শৃগালের উত্তপ্ত বাকবিতন্ডা
জমে উঠেছে "শিবাভির্ব্বহু মাংসাস্থি মোদমানা ভিরন্ততঃ।।"
নির্বাকের ওপারে আলো নির্বেদের এপারে জ্ঞান মাঝে স্তব ছুঁয়ে আছে
দিগন্ত বিসারী কিছু অনুভব চাতালের প্রত্যেক বিগ্রহ আমারই নানান বয়স
মেহগিনীর বোঁটাছিন্ন এই দৃশ্যের ওপরেই আমার ব্রহ্মচর্যের সূচনা
ক্যাথারোসিস
জানালা দিয়ে ১টি ট্রাক গোঙাতে গোঙাতে নদীর দিকেI যায়
জানালা দিয়ে ১টি ট্রাক কিশোরী হাওয়ায় ভেসে আমবাগানে যায়
শহরতলির নীল পেক্ষাগৃহ
বেদী আছে, দেব-দেবী আছেন
দর্শকাসনে কোনো চাঞ্চল্য নেই
কফিমগ থেকে পতনোন্মুখ শেষ চুমুকটি
নিঃশেষিত হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে
মাঝের রাস্তাটি কে পথ মনে হয়