1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

গল্প • সুচেতনা – ডঃ রমলা মুখার্জী

 • অণুগল্প    


সুচেতনা

ডঃ রমলা মুখার্জী



আজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের  দ্বিশতবর্ষের অনুষ্ঠানে দিয়েছে। এটা বর্ণপরিচয়ের প্রথম ভাগ। ঠিক দুশো বছর আগে এই মহামানব বিদ্যাসাগর বাংলাভাষা, বাঙালির পড়াশোনা, মেয়েদের  উন্নতি, বিধবাদের বিয়ে, বাল্য-বিবাহ রোধ এসবের জন্য জীবন-পণ করে লড়েছিলেন। বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলাম যে এই বইতেই আমার প্রথম বাংলা অক্ষর পরিচয়, বাংলাকে প্রথম চেনাশোনা হয়েছিল। তুই তো বাঙালি হয়ে একবর্ণও বাংলা লিখতে দূরে থাক, পড়তেও পারিস না।


অলঙ্করণ : বিশ্বজিৎ মণ্ডল


ইংলিশ মিডিয়ামের স্কুলে পড়ুয়া দশ বছরের মৌ তার মাকে প্রশ্ন করে, 'কি বই কিনলে মাম্মী ?'

সুজাতা বলে, "কিনিনি রে, আজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের  দ্বিশতবর্ষের অনুষ্ঠানে দিয়েছে। এটা বর্ণপরিচয়ের প্রথম ভাগ। ঠিক দুশো বছর আগে এই মহামানব বিদ্যাসাগর বাংলাভাষা, বাঙালির পড়াশোনা, মেয়েদের  উন্নতি, বিধবাদের বিয়ে, বাল্য-বিবাহ রোধ এসবের জন্য জীবন-পণ করে লড়েছিলেন। বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলাম যে এই বইতেই আমার প্রথম বাংলা অক্ষর পরিচয়, বাংলাকে প্রথম চেনাশোনা হয়েছিল। তুই তো বাঙালি হয়ে একবর্ণও বাংলা লিখতে দূরে থাক, পড়তেও পারিস না।"


–সেটা কি আমার দোষ ? তুমিই তো দায়ী, ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি তো করালেই, আবার সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ হিন্দি রাখলে। ড্যাড তো বাংলা মিডিয়ামেরই পক্ষপাতি ছিল।"


–ঠিক আছে তোকে রোজ একটু সময় করে প্রথমে "প্রথম ভাগ", তারপর "দ্বিতীয় ভাগ", "কথামালা" এসব পড়াবো।


– আর ঐ উইডো ম্যারেজ, আর্লি ম্যারেজ ঐ গল্পগুলো বলবে না। বাবা বলছিলো উনি নাকি পঁয়ত্রিশটা গার্লস স্কুল করেছেন বেঙ্গলে, আরও অনেক কিছু করেছেন, সব গল্প কিন্তু বলা চাই। এত বড় গ্রেট ম্যান, কিন্তু কিছুই জানি না। এখন তো এনাফ টাইম, তোমার আমার দু'জনেরই তো স্কুল নেই। 


–বলবো তো নিশ্চয়ই, তবে তুই বাংলা ভালো করে শিখে নে, বড় হলে ওনার "শকুন্তলা", "ভ্রান্তিবিলাস" এইসব অনুবাদ সাহিত্যগুলোও পড়তে পারবি। কি সুন্দর সব অনুবাদ, ঠিক মনে হবে যেন মৌলিক রচনা !

–হিন্দি "বেতালপচ্চিশি" অবলম্বনে কি যেন বই লিখেছিলেন ড্যাড বলছিলো ?

–হ্যাঁ, "বেতাল পঞ্চবিংশতি"। তোকে বিদ্যাসাগরেরই শুধু নয়, আরও সব বাঙালি লেখকের অনেক বই কিনে দেবো। নে এখন তো তোর হাতেখড়িটা সেরে ফেলি।"

–সেটা কি গো মা ? 

 –আমার ব্যাগে দেখ একটা প্যাকেট আছে, নিয়ে আয়।

–এগুলো কি গো মা? 

–এই দেখ না, এটা হল স্লেট আর এই হল স্লেট পেন্সিল।

–কি হবে মা এসব দিয়ে? ঐ যে হাতেখড়ি না কি যেন বললে তাই হবে?

– হ্যাঁ, আমি এই স্লেটে "অ" লিখে দেবো, তারপর তোর হাত ধরে বোলানো করাবো, তাকেই বলে হাতেখড়ি।

মৌকে বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষের শুভক্ষণে বাংলা বর্ণে হাতেখড়ি দিল সুজাতা।

Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন