মানুষ-মানুষে মেশে সৃষ্টি-কর্মের মধ্য দিয়ে। তেমনি এক জন সৃজনশীল কর্মী, কবি জয়দেব বিশ্বাস । কবির কাব্যগ্রন্থ "আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে" পড়তে পড়তে আমার এ কথাই বারবার মনে হয়েছে। এক নিমেষেই কাব্য গ্রন্থটি পড়া শেষ করলাম । শব্দ-চয়ন, চিত্র-কল্প পাঠককে পাঠ দেবে এ বিশ্বাস আমার রয়েছে। বারবার মনে হয়েছে, কবিতাগুলির পরোতে পরোতে কাব্যের অমোঘ টান রয়েছে । –সমুদ্র বিশ্বাস
অব্যক্ত মুক্ত মনের কথা বলেছে কবি জয়দেব বিশ্বাস । –লিখেছেন বিশিষ্ট নাট্যকার ও কবি-সাহিত্যিক সমুদ্র বিশ্বাস ।
মানুষ-মানুষে মেশে সৃষ্টি-কর্মের মধ্য দিয়ে। তেমনি এক জন সৃজনশীল কর্মী, কবি জয়দেব বিশ্বাস । কবির কাব্যগ্রন্থ "আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে" পড়তে পড়তে আমার এ কথাই বারবার মনে হয়েছে। এক নিমেষেই কাব্য গ্রন্থটি পড়া শেষ করলাম । শব্দ-চয়ন, চিত্র-কল্প পাঠককে পাঠ দেবে এ বিশ্বাস আমার রয়েছে। বারবার মনে হয়েছে, কবিতাগুলির পরোতে পরোতে কাব্যের অমোঘ টান রয়েছে। ইচ্ছা করলেই কবিতাগুলিকে ছেড়ে ওঠা বা পাশ কাটিয়ে যাওয়া যাবে না। 'এবার পথে নামার সময় হল' কবিতায় 'রক্ত যুদ্ধ বন্ধ হবে কবে ?' যেমন চিরন্তন জিজ্ঞাসা রয়েছে, এ কথার উত্তরও তার কবিতাটির মধ্যে সাবলীলভাবে বিচরণ করছে--' মানবের সাথে চলো পথে নামি প্রতিবাদ - মুখরতা। কাব্যগ্রন্থের শুরুতেই যেখানে এমন একটি চাওয়া-পাওয়াকে ঘিরে, তখন পাঠকমাত্রই অন্বেষক হয়ে উঠবেন--বলার অপেক্ষা রাখে না। যখন কবি বলতে পারেন-' ধর্ম এখানে ঠুনকো নয়, ধর্মই ধর্ষণ বেশ!' বা 'ভুলে যাওয়া ঈশ্বর-আঙিনায় সে কেন বারবার মরে' বা' কর্দমাক্ত পথের দু'পাশে থাকুক ফুলের সুবাস' তখন পাঠককে তার মানবিক মনের হদিশ পেতে বিলম্ব লাগেনা। যেখানে কাঁদা ক্যাচোড়ে ভরা জীবন, সেখানে
নৈরাশ্য কাটিয়ে কবি খুব আশাবাদী। তাইতো সে বলতে পারে-- 'আজ বৈশাখী ভোরে বেজে উঠুক শাখ্ঁ, জ্বলুক প্রদীপ / আজানের সুর ভেসে যাক অনেক দূর... কিংবা মায়ের চিঠি, শুধু তোমার জন্য, তবু কথা রেখেছি স্বপ্না, একটু বাঁচার জন্য, কবিতাগুলি সুখপাঠ্য শুধু নয়, সেখানে রয়েছে অব্যক্ত কিছু কথা। যে কথাগুলো একান্ত আপন।
কবির কাব্য মনের অন্ধ গলির গোলক ধাঁধায় পড়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন জীবন কাটানো নয়। তাই তার কবিতায় নির্বিঘ্নে বলতে পারে-- 'সেদিন তার দু-চোখে আবিষ্কার হয়েছিল/ ভয়ের এক নতুন সংজ্ঞা, বেঁচে থাকার আত্মবিশ্বাস ।' এই আত্মবিশ্বাসী সৃজনশীল মানুষের সৃষ্টি- কর্ম "আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে" কাব্যগ্রন্থের প্রায় প্রতিটি কবিতায় যেকোনোভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। এখানেই কবির সার্থকতা। অন্ধকারে আলোর দিশারী হতে চায় তার সৃষ্টি। তাই খুব সহজেই 'সেই রাতের কাহিনী' কবির কলম গর্জে ওঠে-- তুমি এ ভাইরাস- যন্ত্রণা একা কেন সইবে?/ এই সু-সময়ে সঙ্গী ক'রে নিও ওই মধু- লোভীদের ।/একটু উঠে দাড়িঁও না হয় আবার।' কিংবা 'একদিন যখন বৃষ্টি হয়ে ফিরব!/ ভিজিয়ে দেবো তোমাকে, তোমার কান্না ধুয়ে যাবে ।/জন্ম হবে আবার আমার বুকে, নিষ্কলঙ্ক রূপে। 'কবির কাব্য আশায় আমরাও আশান্বিত ,পাঠক দরবারে সমাদৃত হলে খুশি হব। তার কাব্যচর্চা এগিয়ে চলুক । এগিয়ে চলুক মানুষের বাস্তব সুন্দর জীবনের দিকে।