কবি-সাহিত্যিক গোবিন্দ পান্তি–বাংলা সাহিত্যে এক দীপ্তিময় নক্ষত্র : ২য় পর্ব
• জয়ন্ত মণ্ডল
বাংলা কবিতায় আধুনিকতা-বিষয়টি কী, তার স্বরূপ কী – তা নিয়ে অনেকদিন ধ'রে আলোচনা চলছে। সঙ্গে চলছে এর অন্তর্নিহিত ভাব বা নির্যাস বের করার নানা চেষ্টা। যে দীর্ঘ কাল-পরিক্রমা নিয়ে আধুনিকতাকে নির্ণয় করতে হয়, বলতে গেলে সাহিত্যে সেই আধুনিকতা হঠাৎ আসেনি। আর সাহিত্যের ধারাবাহিক গতি-প্রকৃতি এর বিস্তৃতি ঘটিয়েছে কবিতায়ও। – কবি গোবিন্দ পান্তিকে নিয়ে লিখেছেন জয়ন্ত মণ্ডল
কবিতা কী, তার রূপ কেমন, কখন আসে ইত্যাদি নানা প্রশ্ন নিয়ে সুদীর্ঘ-কাল ধ'রে ভাবনার শেষ নেই। এ বিষয়ে বিস্তর বৌদ্ধিক আলোচনা হয়েছে। তাবড় কবি, গবেষক ও সমালোচক তাঁদের প্রাজ্ঞ ভাষণে যা বলেছেন তারপর কিছু বলতে গেলে পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা থেকে যায়। আধুনিক কাব্য-সাহিত্যের একনিষ্ঠ সাধক গোবিন্দ পান্তিও মনে করেন, "কবিতার শরীরকে সংজ্ঞার বাঁধনে সীমিত করতে যাওয়ার অর্থ ব্যক্তিসত্তার খণ্ডিত-চিন্তার উপস্থাপন।" সুতরাং এ বিষয়ে আমার মতো অনভিজ্ঞ ক্ষুদ্র মানুষের পক্ষে কবিতাকে সংজ্ঞায়িত করতে যাওয়ার দুঃসাহস - বামন হ'য়ে চাঁদ ধরতে যাওয়ার নামান্তর মাত্র। তবে বিদগ্ধ মানুষের পারস্পরিক অভিমত সাদৃশ্যে ও বৈসাদৃশ্যে বিষয়টিকে আপেক্ষিক ও আলোচনাযোগ্য ক'রে তুলেছে।
শব্দের ছন্দোময় বিন্যাস যা একজন কবির আবেগোত্থিত অনুভূতি, উপলব্ধি ও চিন্তাকে সংক্ষেপে এবং অলঙ্কার-ব্যঞ্জনা-চিত্রকল্পের সাহায্যে উদ্ভাসিত ক'রে, সুমধুর ও শ্রুতিযোগ্য ক'রে তোলে তাই কবিতা। 'কবিতাৱা যখন আসে' প্রবন্ধে কবি গোবিন্দ পান্তি বললেন- "চিন্তার পরিশীলিত-রূপ যখন ছন্দের সুমিত বাঁধনে আবদ্ধ হ'য়ে অথবা বাক্যের শিল্প-সৌন্দর্যে রসাপ্লুত হ'য়ে শারীরী রূপ নেয়, তখন তা হয় কবিতা। এর জন্যে দরকার হয় চিন্তা-সমুদ্র মন্থন, তা থেকে উত্থিত ভাব সামগ্রীর সুষ্ঠু নির্বাচন।"
কবিতার একটি স্মরণ-যোগ্যতা থাকে। কবিতাকে কোনো না-কোনো ভাবে গুঞ্জরিত হ'তে হবে এবং ভাবুক-মনে তার অনুরণন থাকতে হবে। রবীন্দ্রনাথের কথায় -"কবিতা বুঝবার না, হৃদয়ে বাজবার জিনিস।" এই বেজে ওঠাই হচ্ছে আসল, যা কবিতা চেনার প্রধান উপায়।
কবি যখন চূড়ান্ত ভাববিহ্বলতায় নিমগ্ন থাকেন তখন তাঁর মনোজগতে কবিতার জন্ম হয়। এই অবস্থাকে বলা হয় A strain of madness', তবে সেটা নিছক্ খামখেয়ালীপনা, অসংলগ্ন প্রলাপোক্তি বা অরাজক-মানসিক-ক্রিয়া নয়, বরং দৃঢ়বদ্ধ ও সুসজ্জিত সুভাষণ। তবে সকলেই এই শান্তরসের অনুগামী ভাবুক-প্রকৃতির নন। কবিতার আসার সময় আলোচনা কালে কবি গোবিন্দ পান্তি বললেন –
"কবি যখন চারুশিল্প সৃষ্টিতে মগ্ন থাকেন তখন তাঁর মন আপ্লুত থাকে পারিপার্শ্বিক ঘটনা অথবা বিভিন্ন কারণে জাত আবেগ-বিহ্বলতায়। প্রকাশক্ষম এই বাণী-মূর্তি নানা স্বাদের হয়েও তাই 'হ্লাদৈকাময়ী'। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে অনুভবের পার্থক্য থাকবেই তবে নবজাতক- দর্শনে মায়ের মনের তৃপ্তির মতো কবিরাও হৃষ্ট হন সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে আর তখনই কবিতারা আসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।”
সহজিয়া বৌদ্ধ-সিদ্ধাচার্যগণদের সাধন-ভজন বিষয়ক 'চর্যাপদ' ই বাংলা-সাহিত্যের প্রাচীনতম কাব্য-নিদর্শন। খ্রিষ্টীয় দশম শতক থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে রচিত 'চর্যাপদ' এর চব্বিশজন পদকর্তাকে আমরা বাংলা কাব্য-সাহিত্যের আদি কবি হিসেবে ধরতে পারি। এরপর মধ্যযুগে "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এর রচয়িতা বড়ু চন্ডীদাস, বৈষ্ণব-পদাবলীর রচয়িতা বিদ্যাপতি, জ্ঞানদাস, গোবিন্দ দাস, মঙ্গলকাব্যের রচয়িতা বিজয়গুপ্ত, মুকুন্দ রাম চক্রবর্তী, রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র, কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ, মহাকাব্যের সার্থক অনুবাদক কৃত্তিবাস ওঝা ও কাশীরাম দাস প্রমুখ খ্যাতনামা কবির কাব্যকৃতিতে বাংলা-সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়েছে। মধ্য ও আধুনিক যুগের মধ্যে যিনি সেতুবন্ধন করেন তিনি হলেন যুগসন্ধিক্ষণের কবি ঈশ্বর গুপ্ত ও মাইকেল মধুসূদন দত্ত। মধুসূদন দত্ত মধ্যযুগীয় পয়ার ছন্দ ভেঙে প্রবেশ করেন অমিত্রাক্ষর ছন্দব; রচনা করেন সনেট্, লাভ করেন আধুনিক কবিতার জনকের শিরোপা। ভোরের পাখি - ইউরোপীয় ভাবধারার রোমান্টিক গীতিকবি বিহারীলাল চক্রবর্তী বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের অন্যতম রূপকার। মহীরুহের ন্যায় বাংলা কাব্য-সাহিত্যে প্রবেশ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মহাকাব্য ব্যতীত কাব্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি খ্যাতির স্তম্ভটি দৃঢ়ভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেননি। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রানুসারী ভাবধারার অন্যতম কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, যতীন্দ্রমোহন বাগচী প্রমুখ। বিশ শতকের শুরুতে রবীন্দ্র-প্রভাব-মুক্ত হয়ে যাাঁরা কবিতা লিখেছেন তাঁদের মধ্যে মোহিতলাল মজুমদার, কাজী নজরুল ইসলাম, যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
তিরিশের দশকঃ আধুনিক বাংলা কবিতার স্বর্ণযুগ; আবির্ভূত হলেন তিরিশের পঞ্চপাণ্ডব কবি অমিয় চক্রবর্তী, জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে এবং সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। ঠিক পরেই এলেন শক্তি-চট্টোপাধ্যায়। আমাদের কবি গোবিন্দ পান্তি, জীবনানন্দ দাস ও শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতায় বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। প্রচারবিমুখ হয়েও প্রত্যন্ত গ্রামে থেকে কীভাবে গোবিন্দ পান্তি আধুনিক কালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি হ'য়ে উঠলেন সে ইতিবৃত্ত আলোচনার পূর্বে আধুনিক কবিতা ও বিশ শতকে তার বিবর্তনের ধারা সম্পর্কে সীমিত সাধ্যমতো আলোচনা করে মূলস্রোতের উৎস প্রস্তুত করবো।
বাংলা কবিতায় আধুনিকতা-বিষয়টি কী, তার স্বরূপ কী– তা নিয়ে অনেকদিন ধ'রে আলোচনা চলছে। সঙ্গে চলছে এর অন্তর্নিহিত ভাব বা নির্যাস বের করার নানা চেষ্টা। যে দীর্ঘ কাল-পরিক্রমা নিয়ে আধুনিকতাকে নির্ণয় করতে হয়, বলতে গেলে সাহিত্যে সেই আধুনিকতা হঠাৎ আসেনি। আর সাহিত্যের ধারাবাহিক গতি-প্রকৃতি এর বিস্তৃতি ঘটিয়েছে কবিতায়ও। ফরাসি-বিপ্লব থেকে যে ইউরোপীয় আধুনিকতার জন্ম, সাহিত্যের প্রভাবিত ভাবধারায় সেটি প্রসার লাভ করেছে ধীরগতিতেই, এর সঙ্গে কাজ করেছে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অথনৈতিক নানা পরিবর্তন। তবে ঊনবিংশ শতকের শুরুর দিকে বাংলা-সাহিত্যে আধুনিকতা নামক ধারণার হাওয়া লাগলেও বাংলা কবিতার জগতে তার প্রভাব পড়েছে বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে কিন্তু বাঙালির আধুনিকতার রুদ্ধ ধারণাটি মুক্ত করার প্রথম প্রয়াসী মাইকেল। রবীন্দ্রনাথ সেই মুক্ত প্রতিভাতে দিয়েছেন তীব্র স্রোত। তবে মাইকেল বা রবীন্দ্রনাথ ইউরোপীয় আধুনিকতাকে গ্রহণ করেছিলেন ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্যের ক্ষুদ্র বলয় থেকে বেরিয়ে, বাংলা কবিতা তখনও আধুনিকতাকে পরিপূর্ণ-রূপে গ্রহণ করেনি। মাইকেল থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত কবিতা ছিল পরবর্তী তিরিশের দশক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শব্দ-গঠন, ভাষা-শৈলী-বৈচিত্র্য, চিত্রকল্পের অনুভূতি প্রকাশের বিষয়ও ছিল আলাদা। বলতে গেলে মাইকেল থেকে রবীন্দ্রনাথ - সময়কাল বাংলা সাহিত্যের জন্যে ছিল আধুনিকতার প্রস্তুতিকাল। তিরিশের দশকের কবিদের হাতেই বাংলা কবিতা ইউরোপীয় আধুনিকতাকে পরিপূর্ণরূপে গ্রহণ করে। পূর্বের কবিরা আধুনিকতাকে ধারণ করেছিলেন বিচ্ছিন্নভাবে। বিচিত্র প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমও ছিল প্রায় সম্পর্ক-শূন্য কিন্তু তিরিশের দশকের কবিরাই প্রথম আধুনিকতাকে ব্যক্তির উপলব্ধির মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন, কবিতায় গ্রহণ করেছিলেন সমগ্রতাকে - সবকিছুকে ধারণ করেছিলেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। নিজস্ব প্রকাশ ভঙ্গিমায় প্রত্যহ জীবনের নানা উপলব্ধিকে অলঙ্কার ও উপমা সহযোগে প্রকাশ করাই ছিল বিশ শতকের আধুনিক কবিতার মূল বৈশিষ্ট্য। অন্তর্নিহিতভাব বা ব্যঞ্জনা ছিল আধুনিক কবিতার অন্যতম প্রকৃতি। আধুনিক কবিতা সময়ের ব্যবধানে আর সাহিত্যের ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় একটি নিজস্ব ধারা সৃষ্টি করলেও তার মৌলিকতার বিচ্যুতি হয়েছে– এমন ধারণা মনে করার কারণ বা যুক্তি কোনোটাই নেই। বিশেষ ক'রে কবিতায় অনুভূতি বা চিন্তা-স্পর্শের কোনো মৌলিকতাই আধুনিক কবিতার মূল বিষয়কে এতটুকু ম্লান করেনি। সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিযুগের কবিতাই যেমন একটি ধারা সৃষ্টি ক'রে নেয়, সে দৃষ্টি আধুনিক কবিতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
রবীন্দ্র-যুগ পর্যন্ত যে কবিতা ছিল প্রতিনিধিত্বমূলক, তিরিশের দশকের আধুনিক কবিদের হাতে এসে তা হ'য়ে গেলো সম্পূর্ণ ব্যক্তি-চিত্তের অনুভূতি প্রকাশ যার ফলে আধুনিক কবিতা হ'য়ে উঠলো আধুনিক কবিদের ব্যক্তি-উপলব্ধির লীলা-চৈতন্যের সহচর। ব্যক্তি-হাদয়ে ভাবের দ্যোতনা, আন্তর-অনুভূতির শৈল্পিক প্রকাশই আধুনিক কবিতা। একমাত্র আধুনিক কবিতায় একজন কবি পারেন তাঁর মনের চির-চেনা সাধারণ কথাগুলোকে এক উচ্চমার্গীয় শৈল্পিক প্রতিভার দ্বারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশ ঘটাতে। জ্ঞান, বুদ্ধি বা চিন্তার আশ্রয়ই কেবল শিল্পের প্রকাশ নয়, বরং শিল্পের স্পর্শে এসেই জ্ঞানের স্ফুরণ আর বুদ্ধির তীক্ষ্ণ প্রকাশ ঘটেছে আধুনিক কবিতায়। চিত্রকল্পের অভিজ্ঞতার স্বাভাবিক প্রকাশই ব্যক্তির কথাকে কবিতায় রূপান্তরিত করে তবে শিল্পের প্রকাশই কবিতা নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভাব-অভিজ্ঞতা আর দৃশ্য-কল্পনার এক অদৃশ্য ধারাবাহিক বন্ধন। এই বন্ধনের ক্ষমতা খুব অল্প-সংখ্যক কবির মধ্যে বিরাজ করে যার ফলশ্রুতিতে তাঁদের কবিতা হ'য়ে ওঠে মহৎ শিল্পসম্ভার।
তিরিশের দশকে কবিতার স্বর্ণযুগের আকাশে এমনই স্বমহিমায় ভাস্বর দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র জীবনানন্দ দাস ও শক্তি চট্টোপাধ্যায়। কৈশোরে নিজ উদ্যোগে গোবিন্দপুরে লাইব্রেরী স্থাপনের সুবাদে গোবিন্দ পান্তি তিরিশের দশকের আধুনিক কবিতার একনিষ্ঠ পাঠক হ'তে পেরেছিলেন। কবিতার প্রতি সুতীব্র অনুরাগ এবং আধুনিক কবিতার মূল প্রকৃতি বিষয়ে তখনই তিনি বিশেষ জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হন।
আগেই উল্লেখ করেছি যে, মায়ের ছাগল বিক্রির টাকায় তিনি নিয়মিত 'শুকতারা', 'শিশু-সাথী', 'মৌচাক' প্রভৃতি সাহিত্য-পত্রিকার নিয়মিত গ্রাহক হন। তখনই তিনি ভেতরে-ভেতরে লেখার তাগিদ অনুভব করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় তিনি কাঁচা হাতের লেখা পাঠাতেন। দিনের পর দিন ছাপা না হলেও পাঠানো ছিলো অব্যাহত। সে-সময় বিখ্যাত 'শুকতারা' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন স্বনামধন্য সাহিত্যিক মধুসূদন মজুমদার। লেখা না ছাপালেও তিনি নিয়মিত গোবিন্দ পান্তির লেখা-গুলোর চুল-চেরা বিশ্লেষণ ও সমালোচনা ক'রে জবাব দিতেন। কোনোটায় বানান ভুল, কোনো স্থানে ছন্দপতন, কোন্ কবিতা গতানুগতিক– সবই তিনি উল্লেখ করতেন আন্তরিকভাবে। এভাবে মধুসূদন বাবু বাংলা কাব্য-জগতে গোবিন্দ পান্তিকে একজন শক্তপোক্ত আধুনিক কবি হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করতে সাহায্য করেছেন। বাংলা কাব্য-সাহিত্যের শাখা-প্রশাখায় নানা রঙ-বেরঙের পাপড়ি মেলে গোবিন্দ পান্তির অজস্র ফুল হ'য়ে শোভিত হওয়ার পেছনে মধুসূদন মজুমদারের অবদান ছিলো অবিকল্প। বাংলা কাব্য-সাহিত্যের অন্যতম মহীরুহ গোবিন্দ পান্তির লেখনী কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে, সেদিনের সেই আনকোরা লেখক কীভাবে একটি আধুনিক কবির সম্পূর্ণতা পেলেন সে ইতিহাস তাঁর মহান সৃষ্টির আলোকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো।
সমুদ্র-সৈকতের হাঁটুজলে পা ডুবিয়ে মাত্র ক'য়েক বছরে গোবিন্দ সৃষ্টি-সাগরের অজস্র তরঙ্গ পরিমাপ প্রায় অসম্ভব। তবু তাঁর বাৎসল্য-স্নেহকে মুলধন ক'রে গোবিন্দ-চিন্তায় দীক্ষিত হওয়ার সুবাদে সামান্য যেটুকু অর্জন করার সৌভাগ্য হয়েছে তাকে পাথেয় ক'রে এগিয়ে চলেছি। এককথায় গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজো করার মতো– সেকথা আগেই উল্লেখ ক'রেছি। আধুনিক কবিতার পুরোপুরি রসাস্বাদনে আমাকে এখনো অনেকটা পথ চলতে হবে। তবু যেটুকু বুঝেছি নানা অলঙ্কার, ব্যঞ্জনা, সাংকেতিকতা, ইঙ্গিতময়তা, দর্শন, সুরোরিয়ালিজম, রূপক প্রভৃতি হলো আধুনিক কবিতার মৌলিক বৈশিষ্ট্য সুতরাং সেই যৎসামান্য জ্ঞানের আলোকে গোবিন্দ পান্তির বিরাট কাব্য-সৃষ্টি-সাগরকে যতটুকু পারি সীমিত-সাধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করবো ।
[চলবে..]
ধন্যবাদ জানাই
উত্তরমুছুনএমন একজন সাহিত্যিক ও তাঁর কবিতা বিষয়ে জেনে খুশি হলাম। অসাধারণ!
উত্তরমুছুনকবিতা বিষয়ে অনেক কিছু জানলাম।
উত্তরমুছুনkhub valo alochona
উত্তরমুছুন