ব্যাকরণ
যতি বা বিরাম চিহ্নের ব্যবহার
প্রথম অধ্যায় • প্রথম পর্ব
যতি বা বিরাম চিহ্ন :
বক্তব্যের সুস্পষ্টতা ও সহজবোধ্যতার জন্য বাক্যের বিভিন্ন স্থানে শ্বাসবিরতি এবং সমাপ্তি বোঝাতে যেসব চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, সেসব চিহ্নকেই যতি বা বিরাম চিহ্ন বলে । এসব চিহ্নকে ছেদ চিহ্নও বলা হয় । যেমন : , । ;- ( ), { }, ?, !, ; ' ' "-" ইত্যাদি ।
যতি বা বিরাম চিহ্নের প্রয়োজনীতা :
বাক্য গঠনে যতি বা বিরাম চিহ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । যতি বা বিরাম চিহ্ন বাক্যের শ্বাসবিরতি নির্দেশ করে ভালোভাবে এর অর্থ বুঝতে সহায়তা করে । বাক্যে ব্যাবহৃত পদ বা পদসমষ্টি কিম্বা খণ্ডবাক্যসমূহকে কখনো পৃথক আবার কখনোবা সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে এই চিহ্নগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে । কখনো কখনো একই পদ বা পদ সমষ্টি এই যতি চিহ্নের ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে থাকে । যেমন–
১. তুমি আগামী কাল আমার সঙ্গে কোলকাতা যেতে পারবে ।
২. তুমি আগামী কাল আমার সঙ্গে কোলকাতা যেতে পারবে ?
৩. তুমি আগামী কাল আমার সঙ্গে কোলকাতা যেতে পারবে !
এদিক থেকেও বাক্যে যতি চিহ্নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে । এই যতি চিহ্ন ছাড়া বাক্যকে সহজ, সরল, সুন্দর, সাবলীল ও সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করা অত্যন্ত কঠিন বলে ভাষার ক্ষেত্রে এর প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক ।
• কমা ( , ) ব্যবহারের নিয়ম :
বাক্যের মধ্যে স্বল্প বিরতির জন্য কমা ( , ) ব্যবহৃত হয় । বিভিন্ন কারণে বাক্যে এই স্বল্প বিরতির প্রয়োজন হয় । নিচে এই কমা ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম উল্লেখ করা হল :
১. সমজাতীয় দুই বা ততোধিক পদ বা বাক্যাংশ একত্রে থাকলে তাদের মাঝখানে সাধারণত কমা বসে । যেমন : রূপা, পদ্মা, অনয় ও সুশোভন আজ একই মঞ্চে গান গাইবেন ।
২. বাক্যে সম্বোধন পদ থাকলে তার পরে কমা বসে । যেমন : হে যিশু, ও হরি, হে আল্লা আমার যবন হরিদাসকে ফিরিয়ে দাও ।
৩. প্রত্যক্ষ উক্তির পূর্বে কমা বসে । যেমন : হৈম কহিল, "আমি জানি, আমার বয়স সতেরো ।"
৪.বাক্যের শুরুতে অব্যয়কে পৃথক করতেও কমা ব্যবহৃত হয় । যেমন : সুতরাং, তিনি আর সেখানে গেলেন না ।
৫. বাক্যের অন্তর্গত একাধিক খণ্ডবাক্যকে আলাদা করতেও কমা ব্যবহৃত হয় । যেমন : মন উঁচুতে উঠতে চায়, নিচুতেও নামতে চায় ।
৬. প্রশ্নাত্মক বাক্যের লেজুর আলাদা করতেও কমা ব্যবহৃত হয় । যেমন : তুমিতো কাল বাড়িতেই থাকবে, তাই না ?
( ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে )