কবি তারাশঙ্কর আচার্য্য
কবি তারাশঙ্কর আচার্য্য |
শিক্ষা অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুল। চৈতন্য কলেজ হাবড়া। রবীন্দ্রভারতী
বেসরকারি সঙস্থা থেকে কর্মে অবসর।
বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি। বিশেষ ভাবে কবিতা। সপ্তাহ,আজকের প্রমিতা, অনুরাগ, প্রতিধ্বনি, যামিনী কথা,বিদ্রোহিনী যোদ্ধা, ঊষসী, শ্যামচ্ছায়া। বাণীমালা,ইচ্ছে নদী,জেলার বার্তা, উত্তর শ্রীভূমি,বন বানীবীথিকা,সবুজ শৈশব, রঞ্জালোক,বৈঠা ইত্যাদি নানা পত্র -পত্রিকায় আমার লেখা ছাপা হয়।
ছোঁয়া সাহিত্য পত্রিকা এবং প্রাক্তনী সাহিত্য পত্রিকা (অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুল) সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য।
কবি তারাশঙ্কর আচার্য্যেের একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশ হল :
নষ্ট কোরোনা জীবন
***
ঘটনাস্থল থেকে মেঘ
ডেকে চলেছে অবিরাম
আর বাতাসেরা জবর-দখল
করছিল
ঘর-বাড়ি, দোকান বাজার
তৈরি হচ্ছে ভয়ের ঘর
নির্জন অরণ্যে অতিথি
অন্ধকার
সহসা চাপা কান্নার আওয়াজ
দূরে নতুন মিনারে মানুষেরা
আলো জ্বালছে
অন্ধকারে যে পাখিগুলি
গাছ লাগিয়েছে
এ গাছ আজ মৃত
একসাথে ছুটছে মেঘ আর
বৃষ্টি
আমিও প্লাবিত আজ
তুমি নষ্ট কোরো না জীবন
তোমার জন্য
***
এই ভরা বর্ষায়
আকাশের দখলদারিতে
কালো মেঘের ঘনঘটা
চঞ্চল বাতাসের হুটোপুটি
এখনই অন্ধকার নামবে
ধেয়ে আসবে বজ্র-বিদ্যুৎ
শ্রাবণের বারিধারায়
বর্ষাস্নাত পৃথিবীর লাস্যময়ী
রূপ
দক্ষিণের খোলা বারান্দায়
অপেক্ষা করছি শুধু তোমার জন্য
ভয়
***
আকাশের বুকে কোনো
চিত্রকর্ম নেই
নেই কোনো স্বপ্নলোক
সেই পুরনো ছাদের নীচে
অসহ্য ছন্দহীন জীবন
উঁকি দিচ্ছে ভয়
এক শরীর থেকে অন্য শরীর
পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে সেপ্রান্ত
সাময়িক
***
ভোটের বাজার-
পসারিদের ব্যস্ততা।
দক্ষ তুলির টানে,
আসল নকল হয়ে যায়।
অবিরাম আউরে যাওয়া,
গোয়েবলসীয় উক্তি।
চতুস্কোন গোল,
লাল রঙ ফিকে হয়ে যায়।
মাথার ভিতরটা গোল গোল
করে দিলে-
চৈতন্য হওয়ার আগে,
নকল প্রবলভাবে আসল।
স্বস্তিকর আব্রাহাম-
কিছু লোককে ঠকানো যায়
সবসময়,
সব লোককে কিছু সময়।
কালো মেঘ
***
গোধূলি বেলা,
দাঁড়িয়ে আছি নদী তীরে।
সূর্যটা হাবুডুবু খেতে খেতে
তলিয়ে গেল।
আমার মন খারাপ
আমি জানিনা।
হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো
কিছু কিছু শব্দ
যত বারই পৃথিবীর কথা
ভাবছি-
অন্তহীন কালো মেঘ।
কুহকিনী
***
একটার পর একটা
দুর্যোগের ঘনঘটা
মানুষ ছুটছে-
দু'হাতা খিচুড়ি আর শুকনো
চিড়ে
মেনে নেওয়া আর মানিয়ে
নেওয়া
এক মজ্জাগত ব্যাপার
ডাক ছেড়ে কাঁদেও না
যদি শুকনো গলা কাঠ হয়ে
যায়
খাবার জল নেই
মাথা গোজার ঠাঁই নেই
যুগের পর যুগ কেটে যায়
অপেক্ষার শেষ নেই
সত্য যুগও ফিরে আসে না
'ধন্য আশা কুহকিনী'
থেকে থেকে আকাশবাণী
সাবলম্বী হও
যারা মানচিত্র বর্হিভূত
কার রক্ত
***
আমার হৃদয় কাঁদছে
হাতে ধরা স্যালাইনের বোতল
আবেদ বসে আছে
গুলি বেধা অনিলের পাশে
চারিদিকে যা হচ্ছে
গোপাল দৌঁড়চ্ছে পাগলের
মত
রক্ত চাই রক্ত-
আহমেদের কোপ লেগেছে
কে জানে
এখন কার গায়ে কার রক্ত
বইছে
কিছু বিচ্যুতি আর আন্দোলন
গনতন্ত্রের সোপান
অথচ ঘাতকের হাত রক্তাক্ত
তবুও বাকি ভারত সংযত
অশান্ত রাজধানীর রক্ত স্রোতে
বাধ্য দিল গোপাল আবেদরা
চাপ চাপ অন্ধকার
***
দূরে চাদেঁর বুড়ি
হাত ছানি দিয়ে ডাকে
নীল রক্তের সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক
মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
বিদুরের খুঁদ-কুরো
কুড়োবার ধূম
আম আর আটি এক হ'ল না
কখন যেন ক্রদ্ধ মেঘেরা
চাঁদটাকে ঢেকে দিয়ে গেল
সিঁড়িতে চাপ চাপ অন্ধকার
ক্ষনিক বসন্ত
***
দাঁড়িয়ে কেন অচেনা অতিথি?
তোমার উদাসী মন নীল
আকাশে
কখনও বা নীল সমুদ্রের
ঢেউয়ে
আবীরে রাঙানো গাঙ চিল
কোকিলের কন্ঠে ফেলে আসা
সুরের মুর্ছনা -
যেন সারি সারি জ্যোৎস্না
আর দখিনা বাতাসে
ভয় কর তুমি, ক্ষণিক বসন্ত।
অন্ধকার থেকে আলো
দরজা তো খোলাই আছে
আমি আছি অভ্যর্থনায়।
তুমি যে মনুষ্য
***
যদি তুমি শ্রমিক হও, কিংবা
মজুর
উৎপাদনে যন্ত্রবৎ পুরোদস্তুর।
প্রভুদের সেবা কর, আনন্দ
পাও
ক্রীতদাস না হলে রসাতলে
যাও।
হবি স্বরূপ দেহটা কতটা যে
পোড়ালে,
হাড় আর মজ্জায় ক্ষত বয়ে
বেড়ালে।
ওদের কি আসে যায় জ্যান্ত
বা মরাতে,
মৃত্যুতে মুক্তি জেনে যাও
ধরাতে।
তোমার হৃদয় নয়, চায়
হৃদপিণ্ড,
দেহেতে জীবন আছে, বুঝে
নেয় পাষণ্ড।
তোমার মুক্তিতে দিল যারা
প্রানটা
তারা কি ভেবেছিল হবে যে
এমনটা।
তোমারই রক্ত ঘামে 'জী'
কুড়ির সদস্য,
ভাবেনা একবারও তুমি যে
মনুষ্য।
এই বিভাগে লেখার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন
লেখা জমা দিন
Tags:
আজকের কবি