1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

আজকের কবি জুবিন ঘোষ | সাহিত্য চেতনা

 কবি জুবিন ঘোষ

         কবি জুবিন ঘোষ 


কবি জুবিন ঘোষ শূন্য দশকের শব্দশিল্পী । শিক্ষাগত যোগ্যতা- BHM, MBA এবং MBMTech, নিখিল ভারত বঙ্গ-সাহিত্য সম্মেলন থেকে ২০০৪  সালে "সর্বভারতীয় প্রীতিপ্রসার পুরস্কার" ও 'একাডেমী অফ বেঙ্গলি পোয়েট্রি ' থেকে "সারস্বত সন্মান ২০০৯" পুরস্কারে সন্মানিত। এছাড়াও জেলাগুলি এবং বিভিন্ন পত্রপত্রিকা থেকেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পুরস্কার ও সন্মান পেয়েছেন। বিভিন্ন সময় কবি সম্পাদনা ও সহসম্পাদনা করেছেন – ক্ষেপচুরিয়াস, হৃৎপিণ্ড, সংবাদ সাতদিন, আমাদের পরিবার, এক্সক্লুসিভ হেডলাইনস, স্পার্ক, লেখালিখি সববাংলায় প্রভৃতি পত্র-পত্রিকা ও সংবাদপত্র ও ওয়েব ম্যাগাজিনে। জুবিন ঘোষ কে নিয়ে ৭০ দশকের একজন স্বনামধন্য কবি পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত প্রায় ২০০টির বেশি কবিতা লিখেছেন যা জুবিন পর্ব ও জুবিনের নিভৃতগৃহ নাম দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের একটি ঝিলের নাম জুবিন ঝিল বলে একটা গুজব রটেছে। জুবিন কোনও দল করে না, দল বলে একমাত্র বোঝে ফুলের পাপড়ি। বাংলার সব চেয়ে পুরনো ব্লগজিনগুলির মধ্যে জুবিন ঘোষ সম্পাদিত ক্ষেপচুরিয়ানস্‌ অন্যতম। কবিতা ছাড়াও ছোটগল্প, উপন্যাস এবং নিবন্ধ লেখেন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ পত্রপত্রিকাগুলিতে।



কবি জুবিন ঘোষের একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশ হল :



পঁচিশে বৈশাখ  

       ***         


স্পর্শে বড় লোভ মৎসে ঢাকো শাক 

যেটুকু না ছুঁলাম, ওটুকুই

                      পঁচিশে বৈশাখ  



বরজ  

***                   


মৌসুম খরিফ হলে  

পানের বোঁটা শক্ত হতে শেখে 

এমতাবস্থায় যদি জর্দায় বুলবুল হতে চাও 

মুখে নাও ততটুকু চুন 

               যতটুকু সহনশীল হয়  


ঠোঁটকে প্রথমে নিষ্কাম মৈথুন রাখো, নইলে  

মিঠাপান জর্দাপান তফাৎ মেলে না  


তাঁর কত মূর্তি ভাঙবে ? 

মুখের ভেতর সব পান লেলিন হয়ে যায়।  



কাকতাড়ুয়া  

   ***             


কল্যাণকামী নিয়ে যাও আরোগ্য নিকেতনের দিকে 

পিপাষু, দীর্ঘ–ঈ স্বরে, ধানকল ও হাঁসকলের দিকে 

তৃষ্ণা উগড়ে দেওয়া স্যালো পাম্প ছলকায়  


অনতিদূরে মাটির পুতুল 

বিশালাক্ষী থানে কল্যাণকামনায় মগ্ন 

তাকেও ঘিরে আছে লাল ফাঁস 


এসব মোক্ষলাভে কাকতাড়ুয়াটির 

খুপড়ি আরও বৃহত্তর হয়,  

প্রশস্ত দ্বিকাঠির হস্তযুগল খেত আগলে রাখে 

মহাজনের নজর থেকে 


কল্যাণকামী ‘সপাং’ শব্দের অর্থ বোঝে না 

দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মাগনা মাঠটার উপর। 



গৃহস্থ পাবলিকের জন্য 

        ***             


মাকড়সা ঘর বাঁধার মধ্যে 

সুনিপুণ জাল বিছিয়ে রাখে 


ফলুই প্রস্তুত, ঘনা প্রায় অদৃশ্য 

ফাঁদের পথ অন্ধকার গলি, ভাঁজে 


নিম্নে অপার শূন্যতা, উপরে রাপুনজেল  

ঘরামী দোদুল্যমান টলমল সুতোয় পা 


মাঝে মাঝে ঝুল হয়, ঝুলঝাড়া এসে 

ঘর ভাঙে, ঘর গড়ে, আর আমাদের 

চোখের আড়ালে দুই মাকড়সা দম্পতির 

কত লালা ছিটে থাকে। 



আয়ুবিজ্ঞান  

    ***             


চিড়িয়াখানায় ৪০০ বছরের কচ্ছপটি মরে গেছে কবেই 

সুদানও মরে গেল, পৃথিবীর শেষ সাদা পুরুষ গণ্ডার 

দু’দিন ধরে আমার মন খারাপ হয় 

মন ক্যামন হয় আরও দু’দিনের ; এভাবে ঘাগরা–চৈনপুরের 

অসুর জাতির মত মোট চারদিন শোক পালন করি

শোকেরও তো অন্ত্যেষ্টি আছে, তারও দু’দিন পালন পোষণ 

চুল কাটি না, নখ কাটি না, কেলিয়ে থাকি, টান টান কেলিয়ে, 

হ্যাল খেয়ে –– হকিং, কার্তিক লাহিড়ী, রবিশংকরের 

দোজখনামা আর অমিয়ভূষণ মজুমদারের নিঃশব্দ শতবর্ষ 

নিয়ে ভাবতে ভাবতে আরও দু’দিন ডিঙোয়

তারপর ঠিক মন ভাল হবার সময় শেষবয়সের উপেক্ষিত 

কবি আনন্দ বাগচী আর বিনয় মজুমদারের কথা মনে পড়ে 

ডারউইনবাদ থেকে গ্যালাপাগোস দেখতে পাই 

বিগ্‌ল জাহাজের মাস্তুল সান্তা মারিয়ার সঙ্গে পাল্লা দেয়। 



প্রোবাবিলিটি  

    ***


অদৃষ্ট চিরকাল আপেল বাগানের দিকেই ছুটে যায় 

বৃন্ত থেকে খসে গেলে মৌমাছি তার কাছে আসে না 

শরীরের ওপর উঠলে পুরনো চাদর আবার নতুন হয়ে ওঠে 

করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে চটে যাওয়া লাল মেঝের চাঙড় 

এতএব যতগুলো ভাবনাকে উস্কে দিতে পারি তারাই হল সম্ভাবনা 

প্রতিটি সম্ভাবনাও কিন্তু বাচ্ছার কাছে মায়ের টিপের মত 



পরবাস  

  ***    


আস্তে আস্তে চাষ-আবাদে যাচ্ছি ভিজে 

তোমায় আমি রোপণ করি ধানের বীজে 


দ্রাবিড় যুগে দাক্ষিণাত্যের মালভূমি 

জ্বরের ঘোরে আমন-বোরো রয়েছ তুমি 


হয়তো আমরা রইছি দূরে, হাজার তিনেক 

অবুও তো আমরা একই আছি সেই 

                       একটা দিনের...


হিংসা  

 ***         


যদি মারো 

         ছাড়ো 

         ছাড়ো 


যদি ছাড়ো 

         মারো 

         মারো 


আহা কত 

         ছাড়পোকা 

         মারা যায় 


কেটে ফ্যালা 

         সাপের 

         মাথা 

নিজেকেই কামড়ায়  






 


Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন