1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

আজকের কবি দীধিতি চক্রবর্তী | সাহিত্য চেতনা

কবি দীধিতি চক্রবর্তী 

কবি দীধিতি চক্রবর্তী


কবি দীধিতি চক্রবর্তী,  বাঁকুড়া জেলার ময়নাপুর গ্রামে বাবা বিবেকানন্দ মুখার্জী, মা  কল্পনা মুখার্জীর সন্তান। শিক্ষাগত যোগ্যতা বাংলায় এম.এ। ছেলেবেলার থেকেই আবৃত্তি চৰ্চা এবং লেখালেখিতে অনুভব করেছেন এক দুর্ণিবার আকর্ষণ। সে মন্দাকিনী  বর্তমানে সংসারের পাশাপাশি প্লাবন এনেছে  কবিতায়। বিভিন্ন স্বনামধন্য পত্র-পত্রিকা, সংকলনের মার্গ অতিবাহিত করে এবার ভাবনারা একত্রিত একক কাব্যগ্রন্থে।

                রচনায় শব্দের সাবলীল চলন স্বাতন্ত্রতায় মূর্ত। গ্রাম-বাংলার সোঁদা মাটির গন্ধে ওতপ্রোত জীবনের উপলব্ধি স্থান করে নেয় কবির কলমে। সুললিত ছন্দে সহজেই সৃজিত হয় পাঠক মনে গভীর ছাপ। বারবার পড়তে হবে কবিকে। তার রচনার গভীরতা যে অনতিক্রম্য।

               

              

কবি দীধিতি চক্রবর্তীর একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশ করা হল :



 খুব দূরে নেই

        ***

হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর,

যেদিন আবার বাসের জানলা থেকে

দেখতে পাবো পাশের বাড়ির মলি

স্কুলড্রেসে ফিরছে বাড়ির দিকে...


হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর,

যেদিন আবার ফুচকা মুখে করে 

বলবো দাদা, আরেকটু টক হবে

ফাওটা কিন্তু দেবেন মশলা ভরে....


হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর,

যেদিন আবার জমবে বৈধ ভিড়,

দামাল নাতি সামলাতে গিয়ে পথে

ঘাম ঝরবে বৃদ্ধ দাদুটির....


হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর,

যেদিন আবার পার্কে ছুটবে প্রাণ,

দোলনা গুলো উঠবে আবার দুলে

খিলখিলিয়ে গাইবে খুশীর গান....


হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর,

যেদিন আবার জানলায় বল লেগে

ঝনঝনিয়ে পড়বে ভেঙ্গে কাঁচ,

বাড়ির  মালিক গর্জে উঠবে রেগে...


হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর,

যেদিন আবার ছুটবে সময় খুব,

তুমি আমি চোখে নাকে গিলে

দেবো ভীষণ ব্যস্ততাতে ডুব....


হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর,

যেদিন আবার মঞ্চের গাঢ় চোখ

দেখবে আসরে অগুন্তি জনগন

চেঁচিয়ে বলছে আরো হোক আরো হোক....


হয়তো সেদিন খুব দূরে নেই আর

যেদিন আবার জ্বর হয়েছে শুনে

উদ্বেগে তার কপালে ছোঁয়াবো হাত 

আদরে নেবো বুকের কাছে টেনে...


   

   জীবনগাড়ি 

         ***

কেউ বসেছে জানলা পাশে 

সুখের হাওয়ায় উড়ছে চুল, 

কার পা গুঁড়ায় ভিড়ের ঠেলায়, 

কার খসে যায় কানের দুল... 


দরদ দিয়ে কেউ বা শোনায় 

মীরার ভজন একমনে, 

কেউ বা ঝিমোয় শুকনো মুখে 

দুচোখ বুজে এককোণে.... 


মায়ের কোলে বাছা ঝোলে,  

কেউ বা বোসে পেটায় তাস, 

দিলখুশে কার পেট ভরে যায়, 

কার মেটেনা খাবার আশ... 


মুখরোচক নোনতা মিঠে 

কেউ বা বেচে কেউ বা খায়, 

যাত্রাপথে যাত্রীরা সব 

মনের মতো বন্ধু চায়... 


কার সাথে কার চোখ মিলে যায় 

কার আঙ্গুলে কার ছোঁয়া, 

কার ভারে কার লাগছে পিঠে 

কার কাছে কার জল চাওয়া... 


এ রেলগাড়ি আজব ধারার 

স্টেশন মেনে থামবেনা, 

নামতে চাইলে সব স্টেশনে 

দরজা খানি খুলবে না... 


কোন স্টেশনে কার পালা ভাই 

নামবে কে যে কোনখানে, 

এসব জানে রেলের চালক 

আর শুধু ওই রেল জানে... 


অনন্তপথ সফর মেনে 

সবাই একটু জায়গা চায় 

কার জুটে যায় অবলীলায়, 

পুরোটা কেউ দাঁড়িয়ে যায়... 


এসব নিয়েই তর্ক বিবাদ 

ঝগড়াঝাটি অভিমান, 

কিছুক্ষনের যাত্রা পথেই 

অনেকখানি ব্যবধান... 


 নামতে হবেই সময় হলে 

উঠবে কতক নতুন জন... 

কু...ঝিক্ ঝিক্ জীবন গাড়ি 

এমনই তার সাতকাহন....




  তোমার থেকে

          ***

তোমার থেকে ভোরকে নিলুম ডেকে, 

আমার থেকে রাতকে দিলুম ধার, 

তোমার বুকের চিলতে আলোয় সেঁকে 

নিলুম আমার ঠান্ডা অহংকার...


তোমার যত কাছের মানুষ ছিল

আমায় তারা বানিয়ে দিলো চোর, 

চোখ রাঙিয়ে বললো সমস্বরে 

দে বলছি, দে ফিরে ওই ভোর...


ভোর তো তখন আমার পায়ে পায়ে 

বিস্ময়ে সে আমার অনুগত... 

নতুন বৌ এর শাড়ি চুড়ির মোহে 

আবিষ্ট সেই শিশুদের মতো....


আমার চোখের নোনতা কয়েক ফোঁটা 

ছিটিয়ে দিলুম তোমার কাঁটা গাছে.. 

গাছের ডালে ধরলো মায়া ফল 

সুগন্ধি ফুল শাখায় তখন নাচে.... 


তোমার যত কাছের মানুষ ছিল 

আমায় তারা বলল ধান্দাবাজ, 

চোখ রাঙিয়ে বলল সমস্বরে 

দে বলছি,  দে ফিরে ওই গাছ...


গাছতো তখন বাঁচাতে ফুল ফল 

ভরসা রাখছে জলে এবং প্রেমে 

আঁকড়ে আমায় আমার বাছার মতো 

ধীরে ধীরে বাড়ছে আমার ওমে.. 


তোমার বুকে কিনতে গেলুম জমি 

বিনিময়ে তোমায় দিলুম জল, 

শব্দ দিয়ে শব্দ কেটে সেঁটে 

বানিয়ে নিলুম আরেক তাজমহল... 


তোমার যত কাছের মানুষ ছিল 

বলল আমায় সুযোগ সন্ধানী 

চোখ রাঙিয়ে বলল সমস্বরে 

দে বলছি, দে ফিরে ওই জমি... 


জমি তখন আমার বাড়ির ভিত, 

আমার ভার বইছে অহংকারে 

ঠিক যেমনটি দেওয়া নেওয়ার শেষে 

নারী বক্ষ ন্যুব্জ প্রেমিক ভারে...



কে গো তুমি 

       ***

বুকের ঘরে নিত্য ঘটাও 

চূড়ান্ত গোলাঘাট, 

কে গো তুমি, অতীত? 

নাকি সঙ্গীবহুল মাঠ... 


কাঁটার মতো, ব্যথার মতো 

বিঁধছো আমায় রোজ,  

কে গো তুমি, লজ্জা ? 

নাকি মানবতার খোঁজ... 


সর্বাঙ্গে স্নানের মতো 

জড়াও প্রতিপল, 

কে গো তুমি, কান্না ? 

নাকি শুধুই নোনা জল.... 


অসুখ ভুলে তোমার নেশায় 

সত্ত্বা আমার বুঁদ,  

কে গো তুমি, বাঁচা ? 

নাকি বেঁচে থাকার সুদ... 


ঘুনের মতো, ঢেউয়ের মতো 

ঘটাও অবক্ষয় , 

কে গো তুমি, ক্ষতি ? 

নাকি হারিয়ে যাবার ভয়...


সংগোপনে জাপটে তোমায় 

রাতকে করি ভোর, 

কে গো তুমি, মৃত্যু ? 

নাকি মামুলি জীবন চোর...


চক্রব্যূহে আটকা পড়ে 

মানছি কেবল হার, 

কে গো তুমি ? আত্মা ? 

নাকি আমার হাহাকার ?



   মন ভালো নেই 

            ***

মন ভালো নেই দুধের শিশুর

মন ভালো নেই বৃদ্ধার, 

মন ভালো নেই তোমার আমার 

মন ভালো নেই সেই  তার... 


যার প্রিয়টির ক্লান্ত পায়ে 

রেললাইনে শেষ ঘুম, 

যার বাবাটি ট্রাকের ঘায়ে 

হারিয়েছে কাল বেমালুম... 


যার বাছাটির পাচ্ছে খিদে 

চাল আছে তো ডাল নেই, 

যার স্বামীটি সুদূর দেশে 

আটকেছে  ঘোর  আইনে। 


বন্ধুবিহীন স্কুলখানি যার 

দখল করেছে বেডরুম, 

মুঠোফোন আর টিভির স্ক্রিনে

শৈশব যার নিঃঝুম... 


যার অফিসে মস্ত তালা 

চাবির গোছায় মরচে, 

যার আগামীর ঝলমলে পথ 

হঠাৎ ভীষণ কালচে... 


যেসব জীবন বদ্যি বিহীন 

যাপন বড় শক্ত, 

মানের দায়ে রয়েছে যার 

অভাবটি  অব্যক্ত... 


প্রাণ বাঁচাতে যে প্রাণগুলি 

লড়াই করছে দিনরাত,  

প্রিয়জন ভুলে বাড়িয়েছে যারা 

প্রিয়তার ওই দুই হাত....


যার যার প্রাণ, জীবনের টানে   

দেওয়ালের  মাঝে বন্দী, 

সব বুকে আজ দুঃখ কষ্ট 

জমিয়েছে ঘোর সন্ধি.... 


আজ.. 

গাছগাছালি দ্বিগুণ সবুজ, 

আকাশও বেশ নীলচে, 

তবুও জেনো  মানুষ বিনে 

ডুকরে বাতাস কাঁদছে... 


জেনো... 

মন ভালো নেই কৃষ্ণচূড়ার 

মন ভালো নেই তিস্তার, 

মন ভালো নেই হাসনুহানার

মন ভালো নেই রাস্তার...।



 দাগ

 ***

সম্পর্ক জাঁতায় পিষছে রোজ 

মা হয়েছো,খেলনা বাটির খোঁজ 

তোমায় ছাড়া শুধায় বলো কাকে ?

অগত্যা তুই খেলনা খোঁজার পাকে ।


কোলের মেয়ের মাথায় লাগা চোটে 

তুই বিনে বল বরফ কোথায় জোটে ?

অগত্যা সেই  ঠান্ডা কিউব এনে 

মেয়ের মাথায় ঘষা সজল মনে ।


অফিস ফেরতা স্বামীটি তোর যবে ,

ঘেমে নেয়ে  ক্লান্ত ভীষণ ভাবে 

অগত্যা তুই জলের পাত্র হাতে 

ক্লান্ত মানুষ  শান্ত খানিক  তাতে ।


তোর 'মা' যবে যোজন খানিক দূরে ,

স্পর্শ খোঁজেন দূরাভাষের  স্বরে ।

অগত্যা তুই  ছুঁয়ে থাকিস মাকে ,

ভাবিস ছুঁলি... 

আসলে মা অনেক দূরেই থাকে ।


প্রেমিক টি আজ চরম ধন্দে তাই  

 মুখ ফিরিয়ে বন্ধ দিলেন রব ।

তোর সবের ফাঁকে সে ? নাকি 

তার ফাঁকে তোর সব ?


অগত্যা তুই ভাবলি শেষে আজ ,

তোকে ঘিরে কার আছে কোন কাজ ?

ঘিরছে সবাই  বুকের খণ্ড ভাগ ,

সম্পর্ক আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাওয়া দাগ ।


আজ অবেলায় আনমনে তুই 

প্রশ্ন করবি কাকে ?

সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখছে রোজ 

নাকি তিলে তিলে মেরেই ফেলছে তোকে ?



  বন্ধুতা

    ***

যখন বাতাস কাঁপছে ঝড়ে 

জলে জলোচ্ছ্বাস, 

যখন আকাশ গর্জে উঠে 

জানাচ্ছে সন্ত্রাস, 

কিম্বা যখন প্রলয় আমায় 

মাখছে প্রতিপল, 

চিনেমাটির কাপের মতো 

ভাঙছে মনোবল, 

তখন জেনো ঠিক তখনই 

আঙ্গুল একটা চাই  

বন্ধু ভেবে যে আঙ্গুলে 

আঙ্গুল রাখা যায়... 

যে পরশে দুঃখ আমার 

অবশ হয়ে আসে 

থৈ থৈ থৈ নোনতা জলেও 

দু'চোখ আমার হাসে ....



   সীমারেখা 

      ***


মৃত্যুকে আজ ডাকনামে ডাকি খোকা, 

কানপাশ ছুঁয়ে কতো কথা বলে যায়, 

লুকোচুরি খেলে সময় খানিক কাটে 

তেতলার এই একটেরে ঘরটায়... 


এঘর থেকেই  মহীরুহ পাই দেখা, 

চারাগাছ গুলো নজর এড়িয়ে যায়, 

ঠিক যেমনটি স্মৃতি কথা ডাকে রোজ, 

কোলাহল আর দেয়না আমায় ঠাঁই... 


বাড়তি বাক্স, কাগজ বই এর স্তুপ 

সবকিছু থাকে আমার ঘরের পাশেই , 

ওদের সঙ্গে পোকামাকড়ের ভাব 

আমার সাথে মৃত্যু খেলতে আসে... 


অবহেলা বাবা তোরাই জানিস নাকি ? 

আমিও খানিক শিখেছি সবার কাছে, 

জানি কেমন করে ফিরিয়ে দিতে হয়, 

জানি এড়িয়ে মানুষ কেমন করে বাঁচে... 


তাইতো অমন করতে পারি হেলা, 

একলা থাকাকে  সহ্য করি একা, 

ভুলেও কোনো দরজা রাখিনা খোলা 

অনাদরে ওকে বুঝিয়েছি সীমারেখা... 


তবু সে নাছোড় আমায় বাসে ভালো 

আমারও তো  তাই ঠেলতে ভালো লাগে, 

যেই না বোঝে করছি আমি হেলা 

ওরও তখন দ্বিগুন প্রেম জাগে.... 


অনেকটা ঠিক আমার আশার মতো 

পায়ের শব্দে তোরই করে খোঁজ, 

কিছু ওষুধ এবং খাবার হাতে 

গঙ্গার মা আশা ভাঙ্গায় রোজ... 


জানিতো তোরা বড্ডো ব্যস্ত বাবা, 

একমনে তাই অপেক্ষাপথ হাঁটি,  

পা টলে যায় দীর্ঘ পথের পর 

মৃত্যু ছুটে ধরতে আসে পা টি... 


ফুসফুসে আজ বাতাস ঢোকে কম 

দৃষ্টি চোখের উল্টো পথেই হাঁটে, 

সবাই যখন ছাড়িয়ে নিচ্ছে হাত 

ও ই কেবল উঠতে চাইছে খাটে... 


বাইরে দাঁড়িয়ে আমায় ডেকে বলে 

"তোমার দায়ে জ্বলছে ওরা খুব, 

একটি বার বুকের কাছে আসি ? 

থামিয়ে দিই বেকার লাবডুব ? "


দেখলেই  ওকে শিউরে উঠি আমি 

কেনো? তাতো বলতে পারিনা খোকা, 

কেবল ওই ছোঁয়া টুকু  দূরে রেখে 

আটকেছি ওর তেতলার ঘরে ঢোকা... 


এভাবে কদিন পারবো জানিনা বাবা 

বুড়োহাড়ে ওকে সরিয়ে রাখতে দূরে, 

বহুদিন তোকে দেখিনি তেমন ছুঁয়ে 

তেতলার ঘর একবার যাস ঘুরে....



   কবিতা 

     ***


কবিতা মানে তো ছোটো পর্দায় 

দেখে  নেওয়া বড়ো গল্প ,

কবিতা মানে তো নীলচে আকাশ 

ছুঁয়েছির বিকল্প । 


কবিতা মানে তো দেওয়ালে টাঙ্গানো 

আমিটির চোখে চোখ , 

কবিতা মানে তো সে আমিটির 

অগুনতি অনুযোগ । 


কবিতা মানে তো প্রেম প্রেম ঘ্রাণ 

হৃদয়ে হৃদয়ে মিলমেশ 

কবিতা মানে তো খানখান হৃদে 

শব্দ প্রলেপ অবশেষ । 


কবিতা মানে তো বলতে না পারা 

রোজের সত্য কথা , 

কবিতা মানে তো মন সুঁচে বোনা 

শব্দ সুতোর কাঁথা । 


কবিতা মানে তো এলোমেলো সব 

ভাবনা গুলোর জামা , 

কবিতা মানে তো মিছে প্রলাপের 

গোছানো শব্দনামা । 


কবিতা মানে তো অতীত ও এ যুগে 

মিলিয়ে দেওয়ার সেতু , 

কবিতা মানে তো বর্তমানের 

বেঁচে থাকবার হেতু । 


কবিতা আমার , কবিতা তোমার , 

কবিতা চিরন্তন । 

কবিতা জ্বালায় , কবিতা জুড়ায় 

মন আমিটির মন ।




 বাঁচার মানে অন্য 

        ***

তোর জাব্দাপানা বর, 

আস্ত একটা ঘর, 

টাইল্স কাটা মেঝে, 

দুঃখ করা সাজে? 


তোর লাটসাহেবী বাস, 

চাকর বারোমাস, 

ঠান্ডা ঘরের সুখ,

ক্লান্ত কেন মুখ ? 


তোর ব্যালকনিতে টব,

দেওয়ালে বৈভব, 

পর্দা রংবাহার,

কাঁদার কি দরকার ? 


তোর পালিশ করা চুল, 

কানে হীরের দুল,

মেশিন কাটা নখ 

তবুও কেন শোক ? 


তোর লিফ্টে ওঠা নামা, 

হাজার জীবন বীমা, 

সরু চালের ভাত,

তাতেও সংঘাত ? 


দেখ পেটে আমার বাছা,

খিদেয় জ্বলছে খাঁচা,

খাটলে পরের ঘরে,

খানিকটা পেট ভরে... 


আমার আকণ্ঠ মদ স্বামী, 

খাটিয়া কম দামি, 

দিনের শেষে ঘুম, 

বাঁচছি বেমালুম....


আমার বাঁচাতে নেই ছল, 

পাড়ার মোড়ে কল, 

উঁকুন ঘিরছে মাথা, 

স্বপ্ন রাখি কোথা... 


আমার অনিশ্চিত ভাত,

ঝিকোয় সাদা দাঁত, 

মাথায় ফুটো ছাদ, 

জোছোনা আল্হাদ...


আমার কষ্ট পেটের কোণে, 

তোর কষ্ট থাকে মনে, 

বেঁচেই আমি ধন্য  

তোর বাঁচার মানে অন্য....



Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন