1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

আজকের কবি সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায় | সাহিত্য চেতনা

কবি সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায় 









কবি সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায়




বি সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায়, জন্ম ১৯৭৩ সালে পশ্চিম বঙ্গের দ: ২৪ পরগনার মথুরাপুর গ্রামে। স্নাতক ক: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে বাণিজ্য শাখায়। বর্তমানে Power Sector-এ Accounts Dept.-এ কর্মরত। লেখালেখি শুরু ১৯৯২ সাল। তার ১ বছর পর একটি লিটিল ম্যাগাজিনের (নব-বার্ণিক) সহ-সম্পাদক ছিলেন। প্রায় ৭ বছর ধরে এই কাজে নিযুক্ত থাকেন। এ সময় আরো নানান পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। ২০০৫ সালে কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন হন। কবিতা লেখার পাশাপাশি কবিতা আবৃত্তি করতে বেশি ভালবাসেন। ২০০৮ সালে সর্বভারতীয় সঙ্গীত ও সংস্কৃতি পরিষদ, কোলকাতা থেকে সপ্তম বর্ষের আবৃত্তির কোর্ষে প্রথম শ্রেণীতে ডিগ্রী লাভ করেন। এছাড়াও নানা জায়গায় আবৃত্তি করে থাকেন আমন্ত্রিত শিল্পী হিসাবে। কবির প্রকাশিত একগুচ্ছ কাব্য সংকলন (PDF) বর্ষবরণ সংখ্যা ১৪২৪ - উৎসবে মাতি, উৎসবে মাতি - শারদ সংখ্যা - ২০১৬, আনন্দে মাতি-বিজয় দিবস সংখ্যা ২০১৬, উৎসবে মাতি-স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা-২০১৭, উৎসবে মাতি - ঈদ সংখ্যা ২০১৭,  অমর একুশের আনন্দে মাতি ২০১৭ ।


কবি সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায়ের একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশ করা হল :


ফিরে আসছি...

       ***

আজই তোমার চিঠি পেলাম মিতা

সে কারণেই দু কলম লিখতে বসা -

আমি আবারও পেতে চাই তোমাকে

তোমার সান্নিধ্য ও উষ্ণতার উৎকর্ষতা

সময়ের দাম এমন করে দিতে হবে

কেইবা জানতো তুমি বলো -

বড় একা নিঃসঙ্গ জীবন যাপন,

তুমি লিখেছো তোমার কেশরাজ তেল

গায়ে মাখা সাবান, কুমকুম, কাজল

সবকিছু ফুরিয়ে গেছে, ঘরের চাল বাড়ন্ত

ছেলেটার আবদার একটা রঙিন  পাজামা

মায়ের পায়ে দু'রঙের ছেঁড়া হাওয়াই চপ্পল,

শুধু তোমার নিজের শরীরের কথা কিছুই লেখনি...

কেন লেখনি তুমি? সে কি ইচ্ছে করেই!

এবার যখন তিন দিনের জন্য বাড়ি গেলাম

আমি দেখেছি তোমার গা, গায়ের জামা

ব্লাউজে টুকরো রঙিন কাপড়ের সেলাই

অথচো চিঠিতে লিখলেই না তুমি

জানি, কেন লিখতে পারনি !

আমার অফিসের কাজ একপ্রকার বন্ধ

মাইনা হয় না আজ প্রায় চার মাসের ওপর

আমার তালি দেওয়া প্যান্টের পকেট খালি,

চাল-ডাল-তেল-নুন যতটা প্রয়োজন

ততটাও জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছি -

সাধ আর সাধ্যের বাঁধন তুমি প্রিয়তমা।

তবুও একটা সবুজে-হলুদে ডুরে শাড়ি

মায়ের জন্য একজোড়া বর্ষার চপ্পল

একটা লাল রঙের পাজামা আর খোরাকি

এগুলো আমাকে নিয়ে যেতে হবে খুব শীঘ্রই,

তুমি বেশি চিন্তা করো না প্রিয়তমা আমার

আমি একপ্রকার ভালো আছি কোলকাতায়

এখানে আছি বলেই দু'মুঠো অন্নের জোগাড়,

এখানে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ

তবুও সংগ্রাম থেমে নেই বাঁচার লড়াইয়ে

এ যুদ্ধে তুমি আমি আমরা সকলেই সৈনিক

পরস্পরের প্রতি দ্বায়িত্ব বোধ থেকে এন্টিবডি

সতর্কতা অবলম্বন করেই পথ চলা আমাদের

জীবন যত সুন্দর ঠিক ততটাই যন্ত্রণাময়;

তুমি বুঝিয়ে দিয়েছো সে কথা আমাকে

অক্ষরে অক্ষরে লেখা তাই হৃদয়ে আমার

ফিরে আসছি আমি প্রস্বাস নিতে।



কথা  রেখেছি  সুনীলবাবু

               ***

ওখানে কেমন আছ সুনীলবাবু ?

তোমার নীরাকে রেখে চলে গেলে

তবে নীরা আজও যৌবনা রূপবতী

তার ঋজুরেখায় এখনও নির্লিপ্ত হাসি

চোখের মোহিনী আঁখিপাতে আর্দ্রতা

চলনে তটিনীসম হিল্লোল উচ্ছ্বাস

মৃদুভাষে উনমনা মন ঘনিষ্ঠতায়

কেশরাশি বাহান্ন বছরেও শ্যামাঙ্গিনী

এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে

আমি কথা রেখেছি কবি।

একদিন প্রার্থী হয়ে চেয়েছিলাম

তোমার স্বপ্নের সুন্দরী নীরাকে

তুমি স্বহস্তে পত্রপাঠ জবাব দিলে -

তোমার কবিতায় তাকে ঠাঁই দিও

অতিথিকে তবে রেখ যতন করে

তোমার কথা রেখেছি আমি কবি।

তার শ্লীলতা অক্ষুন্ন অটুট আছে

শুধু একটি নিবিড় বন্ধনে স্থির,

কাব্য মাধুর্য্যে বিভোর হওয়ার পর

নীরাকে আমি স্পর্শ করি ছন্দ মন্থনে

চর্চিত তনুরুচির প্রলেপে ভালবেসেছি

আমার অঙ্গুলি সম্পাদনে লজ্জাবতী

রাঙা হয়ে উঠেছিল কিনা জানিনা

তবে শুধু তোমার কথা রাখতে

কখনোই নীরাকে হলুদ রঙে সাজাইনি,

মাঝে মাঝে বিষন্ন দৃষ্টিতে চেয়েছে

বুঝতে পারিনি কতটা অসুখ হলে

একান্তভাবে চোরাপথ অতিক্রম করে

রমণীকে সেবা করলে স্নাত হত,

তবে রাতের গভীর সমবেদনায়

তাকে সঙ্গ দিয়েছি অনুরণনের সাজে

তাই আমার কাব্য তোমার পরশে ধন্য

তুমি আজও আছ সুনীলেরই নীরা।

আজ কাব্যের দ্রোণীতে ভাসিয়ে দিলাম

যাও ফিরে নীললোহিতের রক্তস্রোতে

থাক চিরকাল তারই নীরা হয়ে -

তোমার দাক্ষিণ্যে আমার শয্যা সাজাব

শুধুমাত্র আমার ব্যক্তিগত কবিতায় !



আজি শারদ প্রাতে

           ***

চোখে তোমার প্রেম ছিল

হৃদয়ে ভালবাসা,

বরষা শেষে এলো শরৎ

দূরে যাক্ দুরাশা।

খুশিতে আজ মনের কথা

বলেই ফেলো তুমি,

সব ভুলে তাই আনন্দেতে

নরম গালে চুমি।

তোমার ছোঁয়া প্রাণে আমার

ঢেউ জাগাল আজ,

মিলবো আমরা দু’জনেতে

নেইতো কোন লাজ।

এমনি করে আসে শরৎ

শিউলি ঝরা পথে,

দু’টি মনের মিলন হয়

আজি শারদ প্রাতে।



মুক্তির স্নান

 (কথা ও কাহিনী অবলম্বনে পঞ্চম নিবেদন)

                        ***


হেই কোন্ ছোট্ট বেলায় বাপ মা'রে হারায়েছি মনে লাই

এখন বাবুই আমার মনিব উনি আমার মালিক

যখন যা বলে করে ফেলি কোন চিন্তা না করি

যখন যা চাই - টাকাকড়ি, জামাকাপড়ের অভাব লাই

খুব সুখে আছি বটে এই বাবুর আলয় বারো বচ্ছর হল।

তবে বড় একা লাগে রাতের বেলায় বড় একা

একটা বোন ছিল সেও ভেগেছে চোদ্দ বছর বয়সে

তার কথা চিন্তা করে মাঝে মাঝে চোখ ভিজে ওঠে

আবার সকাল হলে খাজনা আদায়, অনাদায়ে জোর খাটাতেও হয়

সন্ধ্যা-রাতে কাঠ পাচার, মদ পাচার আরও অনেক কিছুই

কিন্তু মদ মেয়েছেলে নিয়ে ফুর্তি আমার ভাল্লাগে না

বয়সতো কম হল না, তা হবেক দু'কুড়ি দুই

তাই ভেবেছি ছুটি নিয়ে চলে যাব তীত্থে

পড়ে থাকব একধারে নিজের মত করে,

কিন্তু তা হবার লয় গো হবার লয়।

মনিব বলে আমার কথা না শুনলে তোরে জবাই করব

তাই মন না মানলেও হুকুম তামিল করতেই হয়।

কিন্তু সেদিন কি যে হয়ে গেল, কি করে ফেললাম

কে যেন কোথা থেকে একটা মেয়েছেলেরে উঠিয়ে আনল

বাবু আমাকে দিয়ে মদ আনাল আর বলল

যা তুই মেয়েছেলেটার ঘরে যা দেখি যা

আমি বাবুর গোলাম তাই যেতেই হল

মেয়েলোকটার শরীর কালো বোরখায় ঢাকা ছিল

আমাকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়ল।

হাত জোড় করে কাঁপতে কাঁপতে কিছু বলতে চাইল

কিন্তু কেন জানিনা বলতে পারল না

আমি ওর নীচের কাপড় ছিঁড়তেই ও গোঙাতে লাগল

তখনও ওর মুখটা কালো কাপড়ে ঢাকাই ছিল

যতক্ষণ না ওকে উলঙ্গ করে বাবুর জন্য ভোগ দেব

ততক্ষণ আমার ছুটি লাই -

অনেকটা সময় চলে গেলেও ওর মুখ থেকে

কাপড় সরাতে না পারায় বাবু এসে বলল -

তুই একটা ছাগল, যা দুয়ারে গিয়ে দাঁড়া

আমি দু'ঘন্টা দাঁড়াবার পর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম

তারপর ঘুম ভাঙিয়ে দিয়ে বাবু বলেন

ঘর থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করে দিয়ে স্নানে যা

আমি যখন ঘরে গেলাম আমার চোখ জ্বলে যাচ্ছে

নিজেকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছা করছে

অসহায় বাপ-মা মরা আমার সেই বোনটার মুখটা দেখে

নিজেরে আর স্থির রাখতে পারলাম না

ছুটে বেরিয়ে গেলাম বাবুর ঘরের দিকে

উনি তখন নিজের শরীর থেকে কাপড়ের জট ছাড়াচ্ছে

মহুর্তে আমি সেই কাপড়ের ফাঁসে ওর গলায় দিলাম টান

মাত্র এক মিনিটের মধ্যে বাবুর শরীর হল নিথর,

অচৈতন্য বোনের শরীর নিয়ে গেলাম গঙ্গা স্নানে

সেই স্নানই হল আমাদের মুক্তির স্নান

সূর্য উঠল আকাশে আলোকিত চারিদিক

সলিল সমাধির উপর তখন বয়ে চলেছে আলোকের ঝর্ণাধারা !

আমাদের লজ্জা

       ***

হাঁস মুরগী ছাগল গরুর মাংস খেয়ে বদহজম

তাই এখন মানুষ শুধু মানুষের মাংস খায়

উন্নত আধুনিক সভ্য সমাজের এটাই উৎকর্ষপত্র

বিশেষতঃ শিশুর নরম মাংস খুবই পছন্দসই,

যারা মাংস বিক্রেতা তাদের একটা নাম আছে

খোলা বাজারে পুঁজিবাদী হিসাবে পরিচিতি

আর যারা ক্রেতা তারা মাংসাশী পশুদল,

আয়োজনে ব্যয়ে কোন খামতি নেই

মায়ের বুক থেকে সদ্যজাত সন্তান চুরি

তারপর নীচ ধনী ব্যক্তির হাতে সমর্পন

অথবা দেহ ভোগের জন্য লালন-পালন

এমনকি অঙ্গ-প্রতঙ্গ বিদেশে পাচারে আমোদ

লালসার আগুনে ভস্মীভূত মানব বিবেক,

একটা চিড়িয়াখানা তৈরী করছে সমাজ

যেখানে বোধহীন পশুরা থাকবে উন্মুক্ত

আর জ্ঞানপাপী মানুষদল খাঁচায় বন্দী,

পশুরা শেখাবে অরণ্যের সভ্যতা

মানুষ উলঙ্গ শরীরে পশুর থাবায় !



তীরবিদ্ধ তটভূমি

          ***

আমরা দাঁড়িয়ে আছি সভ্যতার ধ্বংস স্তূপে

চারিদিকে উত্থান-পতনের ছায়াছবি খণ্ডিত

সংবিধান হয়েছে রচিত হয়েছে পরিবর্তিত পলে পলে

রাজা এসেছে রাজা গেছে রেখে গেছে তার কীর্তি

নব সভ্যতার আলোকে আমরা হয়েছি আলোকিত,

সভ্যতার উৎকর্ষ সাধনে আর্য-অনার্য পাঠান মোঘল হুণ

নিজ নিজ স্থাপত্য রচনায় রেখে গেছে ঐতিহ্য -

নিরপেক্ষতার জাল বুনেছে সাধারণ অমেরুদণ্ডী মানুষ

আর যারা স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সমাজ সেবী সেজেছে

তাদের মাথায় তুলে নেচেছি পদলেহনে দেখিয়েছি পটুতা,

তারপরেও নিরপেক্ষতার দাবী নিয়ে পথে নেমেছি

কুঁজো শরীরে স্লোগান তুলেছি সাম্প্রদায়িকতা নিপাত যাক্,

ভাষা আন্দলনে পায়ে পায়ে রক্ত ঝরিয়েছি কত

অথচ সেই দেশেই চুরি যায় সাহিত্যের নোবেল

চুরি যায় শিশুদের শৈশব যুবকের বিবেক বোধ।

এ কোন সভ্যতা! এতো বর্বরতার বেলাভূমি !

আলোকে উন্নীত উত্তাপ পুড়িয়ে দেয় সোনার পৃথিবী

আঁতেলের জন্ম সূচিত হয় ধ্বংসস্তূপের আঁতুড় ঘরে,

নির্গলিত খাদবিহীন সোনা থেকে যায় কল্পনার অতীতে

বর্তমান শুধু ভারবাহী হয়ে মুখ লুকায় ইতিহাসে !



শেষ সংলাপ…

      ***

ফাটল ধরা দেয়ালের পাশে অচল ঘড়িটাকে টাঙিয়ে দাও।

দুরাশার আঁধার আসুক ঘনিয়ে নিবিড় হয়ে একান্তে।

ভাঙা আয়নাটাকে একটু ডান দিকে সরাতে হবে দাদা –

উঁহু… ও ভাবে সোজাসুজি নয়, বাঁ দিকে কাৎ করে।

নিজেকে দেখে মনে হবে বড় অচেনা

ক্লান্ত পায়ে ঠান্ডা হয়ে আসা জীবন।

ব্যাস, ঠিক আছে। লাইটস…ক্যামেরা…। উত্তমদা, আসুন।

ছোট্ট একটা ক্লোজআপ নেব। এইখানে বসুন,

প্লীজ…দেয়ালে হেলান দিয়ে বলবেন।

মনিটর … অ্যাকশন… উত্তমদা বলুন –

“হয়তো তোমারই জন্য আজও আছি বেঁচে”

না না, এতটা স্পষ্টভাবে নয়।

নিজে নিজের সাথে প্রলাপ বকছেন।

…যেন মনে হবে অনুচ্চারিত অঙ্গীকারে স্বপ্নভঙ্গ!

...মনে হবে পরাজিত মানুষের নিস্ফল রোদন

হাহাকার ধ্বনিতে আজও বাঁচতে চায়,

বাঁচতে চায় শুধু ভালোবেসে।

পড়ন্ত বিকেলের ছায়ায় সন্ধ্যা আসে নিরবে

একাকীত্বের রাত্রি যেন মৃত্যুকে করে আলিঙ্গন।

- আপনার চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ অথচ উষ্ণময় হতে হবে

নিঝুম আবছা-অন্ধকারে সম্মুখে ভাঙা দরজার কার্ণিশ বেয়ে

একজোড়া টিকটিকি ছিটকে পড়ে মাটিতে, তবু মুক্ত হয় না।

মৃত পায়ে পেশা শুকনো ফুলের দীর্ঘশ্বাস

কেঁদে কেঁদে আজও খোঁজে প্রেম।

দৃষ্টিপথে আছে শুধু একখানা লাঠি আর

ধূসর পান্ডুলিপির খেরো খাতাখানি ঘরের এক কোণে।

এগেন…লাইটস…বার্ণিং। উত্তমদা, প্লীজ একটু মেক-আপ…

আলো, এখন টেকিং …অ্যাকশন…

দরজা দিয়ে ধীর পায়ে ভিতরে ঢুকে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পড়ে

তারপর শোনা যায় শেষ সংলাপ…

“হয়তো… তোমারই জন্য… আজও… আছি…বেঁচে !”



হাঁটতে হাঁটতে

        ***

মনের কথা কাকেইবা বলি

আচ্ছা আপনারাই বলুনতো

ভালোকে ভালো আর

খারাপকে খারাপ বলতে পারা

কম সাহসের কথা নয়,

ক'জন সত্যিাটা বলতে পারে

আর ক'জনইবা সত্যাটা স্থাপন করতে জানে !

এইযে আপনি আপনার মত ক'রে বাঁচতে চাইছেন -

এতে দোষের কোথায় কি ?

কিন্তু অপরের কাছে আপনি স্তাবক মাত্র,

আবার দেখুন গৃহের বধূরা

গৃহ ছেড়ে মাঝেমধ্যে টিভির পর্দায়

আপনি বলছেন - যত ন্যাকামো'

কেন এই বাহুল্যতা ?

আরে বাবা দোষের কোথায়!

অপরদিকে রাজনীতি আর গাজনগীতি

সেও সমান তালে হাঁটছে...

সবাই নাকি দেশের ও দশের ভালো চায়

তথা নিজের ভালো থাকার ব্যবস্থা।

এরই মাঝে আমি যে কি করি

সেটাই ভেবে ভেবে কাল গেল,

ভাবছি এবার ভোটে দাঁড়াব

গায়ে একটা তকমা চাই

নয়তোবা স্ক্যান্ডাল !

কি বলেন - বেশ হবে তাইনা ?

অর্থাৎ মাঝামাঝি নয়, ভালো হও–

নয়তোবা মন্দ হলে দোষ কি ?


সব চরিত্র কাল্পনিক

           ***

একটা দিন

অথবা

একটা রাত

না হয় কিছুটা সময়

তোমার আমার কথা–

আমার গল্প গান

প্রলাপ বিলাপ প্রেম,

তোমার স্বপ্ন দেখানো

উপেক্ষার ফসকা সুতোর বাঁধনে

অথবা সময়ের উপবাসে

চিরকুটে লেখা অক্ষরের মত

নন্দিতা নবনীতাকে

অনায়াসেই ভুলে যাওয়া –

উপন্যাসের নায়িকা সংবাদে

নায়কের অনুপস্থিতির কাল,

জারজ সন্তানের জননী

অনাথ শিশুর জন্ম দেয়

সময়ের প্রতিক্ষায় –

রক্ত ঋণের নাগপাশে

নায়ক খলনায়কের ভূমিকায় !


খোকাবাবুর মা


ছিল সে এক ছেলেবেলা শুধুই রঙের মেলা

মায়ের কোলে ছোটো খোকার দুষ্টুমি সারাবেলা,

সারাবেলা খেলে বেড়াই নাওয়া-খাওয়া ভুলে

মা ডাকে আয়রে খোকা খাইয়ে দেব তোরে –

দু্ষ্টূ ছেলে দৌড়ে আসে মায়ের সাড়া পেয়ে

খেলা ফেলে এল খোকা মায়ের কোলে ধেয়ে,

ওরে যাদু ওরে মানিক, মায়ের চোখে জল –

মায়ের চোখে জল, মা কেন কাঁদিস বল ?

খোকা কাঁদে মা কাঁদে আঁখি ছলছল –

তুইযে আমার নীলমনি তুইযে আমার বল,

সকাল সন্ধ্যে লেখা-পড়া আমার হাতে খড়ি

মা বলেন বল খোকা আমি যেমন বলি –

আমি যেমন বলি, আধো আধো সে স্বর

মা হেসে কয়, তুইযে আমার সরস্বতীর বর !

একের পরে হয়যে দুই, দুইয়ের পরে তিন

এক পা দু'পা এমনি করেই নাচি তা ধিন্ ধিন্,

স্নান করতে গেল বেলা, যেতে ইস্কুলেতে লেট

দিদিমনি রেগে আগুন, ছেলের সাথে মায়ের মাথা হেঁট –

মায়ের মাথা হেঁট, আর না হবে সত্যি

রাখবো মায়ের মান, কথা দিল একরত্তি !

এমনি ভাবেই বড় হলাম তোমার ছোটো খোকা

শিক্ষা-দীক্ষা ধর্ম-কর্ম সবই তোমার কাছে শেখা –

তোমার কাছে শেখা আমার বড় করো মন

দেশের লোকে বলবে তবে তুমিই আসল ধন,

মায়ের দুঃখ মায়ের ব্যথা আমার বলে মানি

দুষ্টু থেকে বিজ্ঞ হলাম সুখী হলাম আমি–

সুখী হলাম আমি, সুখ পেলেন মা

বিশ্ব জগৎ মাঝে তাহার নেইযে তুলনা !



এই বিভাগে লেখার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন  

                        লেখা জমা দিন


Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

1 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন