পাবলো নেরুদা :
পাবলো নেরুদা প্রখ্যাত কবি, কুটনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা চিলির সীমান্ত শহর পারলেতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম নেকতালি রিকার্দো রেয়ে্স বাসোয়ালতো। “পাবলো নেরুদা’ নামটির উৎস চেক লেখক জী নেরুদা এবং পাবলো নামটির সন্তাব্য উৎস পাবলো পিকাসো। মানুষের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে তিনি যেমন কবিতা লিখেছেন, তেমনই লিখেছেন এঁতিহাসিক মহাকাব্য, প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইস্তাহার।
১৯২৭ সালে চিলির সরকার তাকে রাষ্ট্রদূত করে রেঙ্গুনে পাঠায়। এ পদে থেকে তিনি চিন, জাপান, কলম্বোসহ ভারতেও আসেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে তীকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। চিলিতে অগান্তো পিনোচেতের নেতৃত্বাধীন সামরিকঅভ্যু্থানের সময় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন নেরুদা। তিনদিন পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি পরলোক গমন করেন।
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :
১. ‘অসুখী একজন’ কবিতায় শান্ত হলুদ দেবতারা ডুবেছিল—
ক. একশো বছর
খ. পাঁচশো বছর
গ. সাতশো বছর
ঘ. হাজার বছর
২, ‘বছরগুলো/নেমে এল তার মাথার ওপর। বছরগুলোর নেমে আসা’-কে কবিতায় তুলনা করা হয়েছে—
ক. মাঠে ঘাস জন্মানোর সঙ্গে
খ. পরপর নেমে আসা বৃষ্টিফোটার সঙ্গে
গ. পরপর নেমে আসা পাথরের সঙ্গে
ঘ. গির্জার এক নানের সঙ্গে
৩. ‘অসুখী একজন’ কবিতাটির ইংরেজি তরজমাটি হল–
ক. The Unhappy Man
খ.The Unhappy One
গ. The Unhappy person
ঘ. The Unhappy Woman
৪. ‘অসুখী একজন’ কবিতাটির উৎস হল-
ক. টোয়েন্টি পোয়েমস্ অফ্ লাভ
খ. হে, স্পেন, আমার হৃদয়
গ. বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে
ঘ. ক্লান্ডস্টাইন ইন চিলি
৫. পাবলো নেরুদার আসল নাম-
ক. নেফতালি রিকার্দো পাবলো রেয়েস নেরুদা বাসোয়ালতো
খ. নেফতালি রিকার্দো পাবলো রেয়েস নেরুদা।
গ. নেফতালি রেয়েস বাসোয়ালতো।
ঘ. নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর :
১. ‘সেই মেয়েটির মৃত্যু হল না।-কোন মেয়েটির মৃত্যু হল না?
উত্তর : কবি কথিত ‘সেই মেয়েটি আসলে মাতৃকল্প দেশ। দেশে যুদ্ধ বাধলে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বাড়ে। দেশীয় সভ্যতা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মরতে মরতে বেঁচে থাকে।
২. ‘সমস্ত সমতলে ধরে গেল আগুন।’ কীভাবে সমস্ত সমতলে আগুন ধরে গেল?
উত্তর : চিলিয়ান নোবেল বিজয়ী কবি পাবলো নেরুদা রচিত “অসুখী একজন’ কবিতায় সেই ভয়াবহ যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক ছায়া সমস্ত সমতলে আগুনের লেলিহান শিখায় সবকিছুকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিল।
৩. “শান্ত হলুদ দেবতারা/যারা হাজার বছর ধরে’ – দেবতারা হাজার বছর ধরে কী করছিল বলে ‘অসুখী একজন’ কবিতায় উল্লেখ পাওয়া যায় ?
উত্তর : ‘অসুখী একজন কবিতায় শান্ত হলুদ দেবতারা হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে ছিল বলে কবি উল্লেখ করেন যে দেবত্বের নির্বিকার নিষ্ক্রিয়তার বার্তাবহ।।
৪. তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না।-কোন্ স্বপ্ন তারা আর দেখতে পারলেন না বলে তুমি মনে করো?
উত্তর : ‘অসুখী একজন’ কবিতায় যুদ্ধের বীভৎসতায় ভেঙে পড়া ‘প্রাণময়’ দেবতারা । শান্তি, মৈত্রী, অহিংসার স্বপ্ন আর দেখতে পেল না বলে আমার মনে হয়।
৫. মন্দির থেকে দেবতাদের টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে যাওয়ার অন্তর্নিহিত অর্থ কী?
উত্তর : ‘অসুখী একজন’ কবিতায় কবির কাছে তার দেশ মন্দির। সেখানে যখন যুদ্ধ বাধল, তখন দেবতাদের মতো পুজো আদায়কারী উচ্চশ্রেণির মানুষেরাও যুদ্ধের অভিঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে গেল, কেন না যুদ্ধ কাউকে ছাড়ে না।
৬. ‘আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়’ কোন পরিস্থিতিতে মেয়েটি কথকের জন্য অপেক্ষা করেছে?
উত্তর : ‘অসুখী একজন’ কবিতায় মৃত্যুর ধ্বংসস্তুপ আর অবিশ্বাসের মধ্যেও কথকের । প্রিয়তমা সেই মেয়েটি তার জন্য অপেক্ষা করেছে।
৭. ‘রক্তের একটা কালো দাগ’ – বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর : ‘অসুখী একজন’ কবিতায় রক্তের একটা কালো দাগ বলতে কবি বোঝাতে চেয়েছেন, যুদ্ধের বীভৎসতায় যেন রক্তও তার স্বাভাবিক রূপ হারিয়েছে। আসলে বিপর্যস্ত ও বিধ্বংসের বিকৃত রূপ বোঝাতে বহু ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যু বোঝাতে, কবি এই ধরনের চিত্রকল্পের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন।
৮. কে, কার জন্য অপেক্ষা করেছিল?
উত্তর : চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা রচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতায় কবিকথিত ‘মেয়েটি অর্থাৎ মাতৃকল্প দেশ, কবির দেশে ফেরার প্রত্যাশায় অপেক্ষা করেছিল।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. “শিশু আর বাড়িরা খুন হল।”-“শিশু’ আর ‘বাড়িরা’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? কেন তারা খুন হল?
উত্তর : সভ্যতার ইতিহাসে সব কিছুই মানুষের চিন্তা-চেতনা কর্মোদ্যমেই সৃজিত। সেখানে নগর সভ্যতা যে অবয়ব তৈরি করে তাতে ‘বাড়ি’ হল প্রিয় বাসস্থান, যার মধ্যে মানুষের গৃহসুখের সদিচ্ছা প্রকাশময় হয়। আর ‘শিশু’ হল ভবিষ্যত স্বপ্নের কোরক। কবি তাই এই দুই পৃথক আবেগের কেন্দ্রকে, আধারকে যুদ্ধ দ্বারা ধ্বংস হতে দেখিয়েছেন।
যুদ্ধ এসে সব কিছু ধ্বংস করে। মানুষের স্বপ্ন-সৃজন-প্রেরণা সব কিছুই যুদ্ধে খুন। হয়। যেমন খুন হয় বসবাসের বাড়ি আর আত্মার আত্মীয় শিশুরা। যুদ্ধই তাদের খুন করে।
২, “তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না”।-মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : যুদ্ধ হলে সমাজের স্থিরতার অবসান ঘটে। যুদ্ধ হল রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো, যাতে শিশু মৃত্যু ঘটে, মানুষ নিরাশ্রয় হয়। সমতলে যেন আগুন ধরে যায়। এই অবস্থায় যে ঈশ্বরেরা হাজার বছর ধরে মন্দিরে ধ্যানমগ্ন ছিল তারাও ভেঙে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে। তাদের স্বপ্ন দেখা, বিশ্ববিধানকে নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদির শেষ হয়। এ আসলে ঈশ্বরের ভেঙে পড়া নয়, ঐশ্বরিকতার বা মানুষের ঈশ্বর বিশ্বাসের ভেঙে পড়া।
৩. “প্রাচীন জলতরঙ্গ সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে’ – বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর : প্রশ্নোপ্ত পঙক্তিটি পাবলো নেরুদা রচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতা থেকে গৃহীত। আগ্নেয় পাহাড়ের মতো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের লেলিহান আগুন, সমতলকেও গ্রাস করেছিল। কবির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত মিষ্টি বাড়িটিও যুদ্ধের নির্মম অভিঘাতে ধ্বংস হয়ে গেছিল। সেই বাড়ির বারান্দার ঝুলন্ত বিছানা, সোলাপি গাছ, ছড়ানো করতলের মতো পাতা চিমনি ও প্রিয় প্রাচীন জলতরঙ্গ সবই ভেঙে গেল, সম্পূর্ণ ভস্ম হল যুদ্ধের আগুনে। অর্থাৎ কবির আশ্রয় অস্তিত্বের একমাত্র প্রতীক চিহ্নটিও যুদ্ধের নিষ্ঠুর ধ্বংসলীলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. অসুখী একজন কবিতায় কাকে অসুখী বলা হয়েছে? সে কেন অসুখী? কবিতা অবলম্বনে তা বুঝিয়ে দাও।
অথবা,
অসুখী একজন কবিতার মূল বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখ।
অসুখী একজন : সাম্যবাদী ভাবধারার কবি পাবলো নেরুদা তার অসুখী একজন কবিতায় আক্ষরিক ভাবে দুজন অসুখী মানুষের ছবি রয়েছে। এজন কবিতার কথক এবং অন্যজন বক্তার ফেলে আসা প্রিয়জন। সেই প্রিয়জনের সুখহীনতার কথা বা সমগ্র কবিতা জুড়ে তুলে ধরেছেন।
অসুখী হওয়ার কারণ : অসুখী একজন কবিতায় কবি দেখিয়েছেন যুদ্ধ মানুষকে অসুখী করে। কবি বা রুপে একজনকে চিহ্নিত করে তার জবানীতে এক পারিবারিক তথা সামাজিক ও রাষ্ট্রনৈতিক জীবনের চালচিত্র অঙ্কন করেছেন। বক্তা যুদ্ধের প্রয়োজনে ঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। আর তার প্রিয়জন মেয়েটিকে বাড়িত রেখে যায়। মেয়েটি তার অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে। দিন, মাস, বছর পেরিয়ে গেলেও সে আর ফিরে আসে না।
যুদ্ধে সমতলে আগুন ধরে। কবির মিষ্টি বাড়ি, বারান্দা, ঝুলন্ত বিছানা, করতলের মতো পাতা, চিমনি, প্রাচীন জলতরঙ্গ সবকিছু যুদ্ধের আগুনে চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যায়। যেখানে শহর ছিল সেখানে পড়ে থাকে কাঠকয়লা। দোমড়ানো লোহা। পাথরের মূর্তির বিভৎস মাথা, রক্তের কালো দাগ। মানুষের জীবনের আশা ভরসার দেবতারা ভেঙে যায়। টুকরো টুকরো হয়ে তাদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়।
মূল্যায়ন : এরুপ প্রেক্ষাপটে একাকী দাঁড়িয়ে অসুখী মেয়েটি শুধু জীবন ধারণের কষ্ট নিয়ে অপেক্ষমান। তার পরিচিত ব্যক্তির আগমন। প্রত্যাশা তাকে অধীর করে তুলছে। অন্তরকে বিদীর্ণ করে তুলেছে। তাই বলা যায় কবিতাটি যুদ্ধ বিরোধী তথা মানবতাবাদী কবি।
২. ‘সেই মেয়েটির মৃত্যু হল না’—মেয়েটি কে, কোন প্রসঙ্গে এই বক্তব্য? বক্তব্যটির তাৎপর্য লেখ।
উত্তর : প্রিয়তমা মেয়েটি : চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা রচিত অসুখী একজন কবিতায় মেয়েটি হল কবির প্রিয়তমা। অর্থাৎ কবিতার কথক ও সৈনিকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে।
প্রসঙ্গ : দরজার সামনে অনন্ত প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল প্রিয়তমা। কবি তাকে অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে চলে এসেছিলেন। অনেক সময় অতিক্রান্ত হলেও কবিতার কথক ফিরতে পারেননি। যুদ্ধের ভয়াবহ আগুনে সবকিছু ধ্বংস হয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি তবুও অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল। সেই প্রসঙ্গ আলোচ্য অংশটির অবতারণা। তাৎপর্য ; কবির প্রিয়তমা কখনোই অনুমান করতে পারেননি যে, কবি কখনো আর ফিরে আসবে না। সময়ের ধারায় একের পর এক বছর কেটে যায়। বৃষ্টির ধারা কবির পথচলা পায়ের চিহ্ন মুছে দেয়। ঘাম জন্ম নেয় পথের বুকে একের পর এক পাথরের মতো বছরগুলো চেপে বসে মেয়েটির বুকে। মাথার ওপর অসহ্য যন্ত্রণা নেমে আসে।
যুদ্ধ শুরু হলে চারিদিকের সময়ে পরিবেশ যুদ্ধের আগুনে ধ্বংস হয়। শিশু আর বাড়িরা মৃত্যুবরণ করে। তবুও সেই মৃত্যুপুরীর মধ্যে প্রিয়তমা মেয়েটি অনন্ত প্রতীক্ষা নিয়ে বেঁচে থাকেন। সমস্ত ভাঙনের মধ্যে সে যেন একমাত্র জীবনের প্রতীক। যুদ্ধের বিধ্বংশি আগুনের মন্দিরের দেবতা পর্যন্ত মন্দিরর থেকে বাইরে বেরিয়ে এল। কবির স্বপ্নের বাসভূমি চূর্ণ হয়ে গেল। তবুও সেই মেয়েটি অনন্ত। প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে রইল।
৩. ‘তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না’ এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে? কোন প্রসঙ্গে এই বক্তব্য? স্বপ্ন দেখতে না পারার কারণ কী?
দেবতাদের কথা : চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদার অসুখী একজন কবিতায়দেবতাদের কথা বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : যুদ্ধের সময় চারদিকে মৃত মানুষের শব জমে উঠেছিল। যে দেবতারামানুষকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করে, মানুষের অনন্ত কল্যাণ করবেন, তারাওমন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়েছিল। সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি। ্বপ্ন দেখতে না পারার কারণ : অষ্টাদশ শতাব্দীর অন্নদামঙ্গলের কবি ভারতচন্দ্রলিখেছিলেন—‘নগর পুড়লে দেবালয় কী এড়ায়? ‘ এই তির্যক বক্তব্যের কারণ সঙ্গত। যখন চারিদিকে ধ্বংসের কোলাহল শোনা যায় তখন দেবতারা যেন মানুষের মতো অসহায় হয়ে পড়েন।
যুদ্ধের আগমনে চারিদিকে শোনা যায় ভয়ংকর শব্দ দানবের রণ উন্মত্ততা। বাতাসে যখন বারুদের গন্ধ ঘরবাড়ি সবকিছু ভেঙে যায়। সারা অঞ্চল জুড়ে চলে আগুনের ঘোলি খেলা। ঈশ্বরের ধ্যানমগ্ন মূর্তিগুলি ছিন্নভিন্ন হয়। মন্দির থেকে তারা উল্টেপড়েন। টুকরো টুকরো হয়ে যায় দেবতাদের প্রতিকৃতি। কবির মনে হয়েছে এইদেবতারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না। তারা যেন অসহায় মানুষের মতো বিপন্নতারশিকার হল। তারা আর মুক্তির পথ দেখাতে পারবে না। আশার আলো তাদেরজীবন থেকে দূরে চলে গেল কারণ তারা নিজেরাই অসহায়।