'সাহিত্য চেতনা'র ৩য় লাইভ অনুষ্ঠান
স্থান–গোবিন্দপুর 'অনুরাগ সাহিত্য সংস্থার' সম্পাদকের বাড়িসময়– বিকেল ৩ টে।
গতকাল ২১ শে ফেব্রুয়ারী "সাহিত্য চেতনার" উদ্যোগে এবং "অনুরাগ সাহিত্য সংস্থার" সহযোগিতায় উদযাপিত হলো ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ৩য় লাইভ অনুষ্ঠানটি । অনুষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা এবং উপস্থাপনে অনবদ্য । বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান জানানো এবং সে সম্পর্কিত সংগ্রামী ইতিহাস সমৃদ্ধ দিনটি পালিত হলো পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে, "সাহিত্য চেতনা"ও তার ব্যতিক্রম নয়।
সম্পাদক জয়দেব বিশ্বাস বলিষ্ঠভাবে তাঁর মনন ও চিন্তার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন অনুষ্ঠানটিতে। যন্ত্রানুসঙ্গসহ ধারাবাহিকতায় মুন্সীয়ানার অনুষ্ঠানটি সার্থক। অনুষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে জয়ন্ত মণ্ডল তাঁর সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছেন ।
অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয় ড. জয়শ্রী মিত্রের রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে । সকলেই ভাষা আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা সম্পর্কিত কবিতা পাঠ করেন।
কবি নবকুমার বিশ্বাস দরাজ কণ্ঠে আবেগী ভাষায় মোড়া কবিতা পাঠ করে সকলকে আনন্দ দেন। প্রবীন শিক্ষাব্রতী কবি স্বপন কুমার বালা ভাষার প্রতি সম্মান জানান একটি কবিতা সুললিত কবিতার মাধ্যমে। কবিতা পরিবেশন কালে তাঁর বাচন ভঙ্গী সকলকে চমৎকৃতকরে। একে একে কবিতা আবৃত্তি / পাঠ করেন স্মিতা বাগচি, কণিকা বৈরাগী, প্রদীপ সরকার, প্রবীণ শিক্ষাব্রতী রওশন আলি, শিক্ষাব্রতী খায়রুল হক, গোকুল মণ্ডল, সঞ্চালক জয়ন্ত মণ্ডল, জয়ন্তী নাথ, প্রতিবেদক স্বয়ং প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানটি সর্বাঙ্গীন সুন্দর করার দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন তাদের মধ্যে চিন্ময় ও সমীরণ উল্লেখযোগ্য । তবলাবাদক অমিয় মণ্ডল প্রশংসনীয় ।
অনুষ্ঠানটির প্রধান আকর্ষণ ছিলো সঙ্গীত। কল্পনা পাল "আমি বাংলায় গান গাই" সঙ্গীতটি গেয়ে শোনান। এরপর সকলের অবাক করানো গান ড. প্রসন্ন সাহার, তিনি শোনান সেই বিখ্যাত সঙ্গীত– 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' । মন-প্রাণ ভ'রে যায় সকলের। এরপর আরো চমকানোর পালা, উদাত্ত অথচ মধুর কণ্ঠে সঙ্গীত শোনালেন গোবরডাঙা খ্রিস্টান মিশনের ফাদার গৌরাঙ্গ হালদার; ভূপেন হাজারিকা যেন স্বয়ং এলেন। অবাক করা কণ্ঠ !
বর্ষীয়ান নাট্যকার /প্রাবন্ধিক কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস তথ্য সহযোগে বিশ্লেষণ করলেন ভাষা দিবসের তাৎপর্য। অনেক অজানা তথ্য উঠে এলো তাঁর ব্যাখ্যায়। অভিজ্ঞ শিক্ষাব্রতী সফিকুল ইসলাম নাতিদীর্ঘ ভাষণে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে সকলকে বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হ'তে অনুরোধ জানালেন।
শেষ পর্যায়ে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত দিয়ে শেষ হলো অনুষ্ঠান, পরিচালনা করলেন ফাদার গৌরাঙ্গ হালদার।
পরিশেষে জানাই আশার কথা, মনোজ্ঞ এই লাইভটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১২ জন সংস্কৃতিবোধ সম্পন্ন মানুষ আবেদন জানিয়েছেন।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে 'সাহিত্য চেতনা'র সমৃদ্ধি ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।