জীবন জিজ্ঞাসা
আকাশ নীল বিশ্বাস
***
মনমোহিনী, তোমায় খুঁজি
হৃদয়ের অন্তঃস্থলে, গহীন মন-অরণ্যে, নিভৃত স্বপ্নে...
তোমার গভীর নিশ্বাস,
তৃষ্ণার্ত করে তোলে আমায়,
জীবনযন্ত্রনাকে, উশকে দেয় বারবারে।
আমার স্বপ্নের গ্রেভিয়ার্ডে,
নির্ঝর বারিধারায়, মনলোভাতুর কামার্ত হৃদয়ে,
অনুভব করি তোমায়,
বারংবার, বারবার।
ঘুরে-ফিরে আসো তুমি
সিক্ত করো মোর, তপ্ত মস্তিষ্ককে।
বৃষ্টিস্নাত হয়ে, সালঙ্কারা, ব্রীড়াবণতার মতো।
প্রেয়সি-রূপসী-মোহিনী-কামিনী হয়ে
বারবার আসো তুমি,
আমার মনের এপিটাফে,
খোদিত করে যাও তোমার, সুললিত গুঞ্জন।
তোমার অক্ষিপল্লবের উন্মিলনে, কেশরাজির ছন্দায়িত নৃত্যে,
বিভোর হই বারেবারে।
হারিয়ে যাই অতল এক সমুদ্রগহ্বরের, রত্নখচিত প্রবাল-প্রাসাদে,
শব্দশূন্য সেই অতলতাকে, প্রত্যক্ষ করি
অনুক্ষণ, প্রতিক্ষণ...
তব উপস্থিতি, অনুভব করি
শ্রাবণের ঝরঝর বর্ষায়, আল্পসের নাভিমূল থেকে উদ্বেলিত ঝর্ণায়, অর্ফিয়াসের বংশীবাদনে,
দেবী এথেনার বীণা-ঝংকারে,
বসন্তের রাধাচূড়ায়, অ্যামাজনে প্রষ্ফুটিত অর্কিডের সমাগমে, রবীন্দ্রনিকেতনের আম্রকুঞ্জে আর আশ্রমপ্রাঙ্গণের ছায়াবীথিতে,
আমার সিগারেটের ধুম্রজালে, মদিরাপূর্ণ পানপাত্রে,
তন্দ্রাচ্ছন্ন দ্বিপ্রাহরিক আলসেমিতে, সর্বসন্তাপহারিণী ক্লান্তিকর নিদ্রায়।
শরতের এক কল্লোলিত, রৌদ্রস্নাত দিনে
প্রথম এসেছিলে তুমি,
তোমার স্বরের ধনুষ্টঙ্কার, বিঁধেছিল আমায়, শব্দভেদী বাণের মতো...
তারপর?
যাতনাময় জীবনে, স্যমন্তকের ন্যায়,
মনভোলানো মেঘাচ্ছন্নতায়,
এলে তুমি, বিদুৎবাহী কালবৈশাখী হয়ে।
কল্পিত মধুচন্দ্রিমায়,
মার্বেলাবৃত সমতলে, দ্রাক্ষারসের মাধুর্যপানে
মদমত্ত চিত্তে, তব বরাঙ্গে মাথা রেখে ভাবি -
ঠিক কতটা বেদনা পেয়েছিল অম্বা,
জাহ্নবীসূতের প্রত্যাখ্যানে?